সাদৃশ্যকরন...................................তুহিন রহমান (ঈদ সংখ্যা ২০২০)
‘আরে কাকে বলছিস?’
‘তোকে না।’
‘আমাকে না তো বুঝলাম কিন্তু কাউকে না কাউকে তো বলছিস।’
‘হ্যাঁ বলছি একজনকে। আমার পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে এখন দিতে চায়না। বলে এগুলো নাকি এখন দিতে পারবে না।’
‘তা তুই কি বলেছিস?’
লাড্ডু জানালা দিয়ে বাইরে তাকালো। ঝমঝম বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সবাই রাস্তা ছেড়ে পালাচ্ছে যেদিকে পারছে। একটু ঝড়ো হাওয়াও আছে সাথে। সামনের গাছগুলো দুলছে। সামনের মোটা ইলেকট্রিক তারের ওপর কয়েকটা কাক বসেছিল। বৃষ্টি নামতেই উড়ে পালালো। ‘আমি কিছু বলিনি। একটা কুত্তার বাচ্চাকে কি বলবো আমি?’
‘তোর উচিত ছিল তাকে সামনে থেকে এই গালিটা দেয়া যাতে সে নিজেকে ঘৃনা করতে শেখে।’ বললো চপল। ‘তুই গিয়ে কথাটা তাকে বলবি।’
‘ঠিক আছে, দেখা যাক।’ লাড্ডু আরামদায়ক সোফাটার ওপর বসলো। ‘এক কাপ চা আনতে বল তোর কাজের মেয়েটাকে। যে বৃষ্টি শুরু হলো যাবো কিকরে তাই ভাবছি।’
চপল কাজের মেয়েটাকে ডেকে দু’কাপ চা দিতে বললো। তারপর আপনমনে নিজের কাজ করতে লাগলো টেবিলে। দশ মিনিট পর কাজের মেয়েটা দু’কাপ চা রেখে গেল টেবিলে।
লাড্ডু নিজের চায়ে চুমুক দিল। হঠাৎ রাস্তার ট্রান্সফর্মারটা বিকট শব্দে আর্তনাদ করে উঠলো। একই সাথে রুমটা অন্ধকার হয়ে গেল। কারেন্ট চলে গেছে।
‘এই যা, এই অন্ধকারে কাজ করি কিভাবে?’ চপল উঠে পড়লো টেবিলটা থেকে। ‘আচ্ছা তুই বস, আমি গোসলটা সেরে আসি।’
লাড্ডু মাথা নাড়লো। চায়ের কাপটা শূন্য করে নামিয়ে রাখলো টেবিলে। খোলা জানালা দিয়েঠান্ডা বাতাস আসছে হু হু করে। ও আরামে চোখ বন্ধ করে সোফায় হেলান দিয়ে বসলো। এই গরমে যে এসি ছাড়া এমন ঠান্ডা বাতাস পাওয়া গেছে সেই তো অনেক। উফ, গরমে প্রানটা একেবারে গলার কাছে উঠে এসেছিল। পকেটে হাত দিতে সিগারেটের প্যাকেটটা হাতে ঠেকলো। খুশি মনে প্যাকেটটা বের করে দেখলো একটাও সিগারেট নেই তার ভেতর। মনে মনে একই রকম একটা গালি ঝেড়ে লাড্ডু প্যাকেটটা জানালা দিয়ে ছুঁড়ে দিল বাইরে। তারপর মাথার পেছনে হাত রেখে চোখ বন্ধ করলো। কিন্তু পেটটা টনটন করছে। সেই সকালে বাথরুম সেরে ঘর ছেড়ে বেরিয়েছিল, এখন পর্যন্ত বাথরুম সারা হয়নি। প্রশ্রাব জমে পেটটা একেবারে ফুলে উঠেছে। অস্থির লাগছে ভীষন। চপলের রাথরুমটায় যাওয়া যেত! মনে পড়লো চপল বাথরুমে গোসল করছে। ওদের বাড়িতে একটাই বাথরুম। যে করে হোক চেপে বসে থাকতে হবে।
কি আর করবে, উপায় নেই। লাড্ডু প্রশ্রাব চেপে সোফায় হেলান দিয়ে বসে থাকে বাইরের দিকে তাকিয়ে। গতরাতে ভালো ঘুম হয়নি। এখন চোখ বেশ ভার ভার বোধ হচ্ছে। বাড়ি গিয়ে আচ্ছা করে ঘুম দিতে হবে দুপুরের খাবার খাওয়ার পর। বৃষ্টির বেগ বাড়ছে। খোলা জানালা দিয়ে দুরের গাছগুলোর হেলে পড়া দেখতে ভীষন ভালো লাগছে।
বৃষ্টি থেমে যাবার পর আধাঘন্টা পেরিয়ে গেছে। চপল এখনও বেরুচ্ছে না বাথরুম থেকে। লাড্ডুও চেঁচিয়ে ডাকতে পারছেনা। ভেতরের ঘরে ওর মা, ওর দুটো বোন আছে। চপলের ছোট বোনটার প্রতি আবার লাড্ডুর একটু দুর্বলতা আছে। তাই এখানে জোরে কথা বলা বা কোন উদ্ভট আচরন করা যাবেনা। এদিকে পেট ফেটে যাচ্ছে।
‘দুর! উঠে পড়লো লাড্ডু। এখানে প্রশ্রাব করার দরকার কি? বাড়ি যাবার পথে সেরে নেয়া যাবে। চপল এসে দেখবে সে নেই। তাতে কোন সমস্যাও নেই। দরজাটা বাইরে থেকে বন্ধ করার সিস্টেম আছে। সেই সিস্টেম মেনে দরজাটা বন্ধ করে লাড্ডু সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে আসে। ভেজা পিচঢালা রাস্তাটা চকচক করছে একেবারে। কি সুন্দরভাবে প্রকৃতি সব পরিস্কার করে দিয়ে গেছে!
লাড্ডু বাড়ির দিকে হাঁটতে লাগলো। কিন্তু প্রতি পদে তার পেটটা মুচড়ে উঠছে। মনে হচ্ছে পেটের ভেতর থেকে প্রশ্রাবগুলো ফেটেই বেরিয়ে আসতে চাইছে। আল্লাই জানেন কিভাবে মেয়েমানুষগুলো দশ মাস দশ দিন বাচ্চা পেটের ভেতর চেপে রাখে।
চারপাশে তাকাতে লাগলো লাড্ডু। কোথায় যাওয়া যায়। আশেপাশে কোন পাবলিক টয়লেট নেই যে সে সেখানে গিয়ে প্রাকৃতিক কাজটা সারবে। শেষ পর্যন্ত পেয়ে গেল সে জায়গাটা। একটা ডাস্টবিনের ঠিক পেছনে চমৎকার একটা দেয়াল। একেবারে নতুন রঙ করা হয়েছে দেয়ালে। সম্ভবত কোন রাজনৈতিক পার্টি তাদের কলাম লিখবে এখানে। একেবারে ফাস্টক্লাস প্রশ্রাব করার জায়গা, মনে হয় খোদা মিলিয়ে দিয়েছে তাকে। একটা শান্তির দম ছেড়ে সেদিকে এগিয়ে গেল লাড্ডু। প্যান্টের চেইনটা খুললো। তারপর আস্তে ধীরে ছাড়তে লাগলো নতুন রঙ করা দেয়ালের ওপর। আহ কি শান্তি! পৃথিবীতে এর চেয়ে শান্তির কিছু আছে নাকি কে জানে। একই সাথে একটা ডিজাইন আঁকাও হয়ে যাবে দেয়ালটার ওপর। লাড্ডু একটা মুখ আঁকতে চাইলো সেখানে।
আচমকা পাশ থেকে কেউ ঘেউ করে উঠলো। লাড্ডু পাশে তাকিয়ে চমকে উঠলো একেবারে। একটা হলুদ রঙের ঘেয়ো কুকুর এক ঠ্যাং তুলে তার ঠিক পাশে দাঁড়িয়েই প্রশ্রাব করছে একই দেয়ালের ওপর। লাড্ডু আরও অবাক হলো যখন দেখলো কুকুরটা তার দিকে তাকিয়ে দাঁত বের করে হাসছে।
কোনমতে প্রশ্রাব শেষ না করেই তার যন্ত্রটা চেইনের ভেতর ঢোকালো লাড্ডু। সরতে যাবে কুকুরটা তার পথরোধ করে দাঁড়ালো। তারপর মানুষের গলায় বললো,‘প্রশ্রাব যে করলা, চাইয়া দেহ তোমার প্রশ্রাব গড়াইয়া রাস্তায় চইলা আসছে। এহান দিয়া মানুষ চলবো না? তাকায় দেহ আমি কেমনে করসি। আমারে তো কুত্তা বইলা গালি দাও। তুমি আর আমি তো একই জাগায় হিসি করলাম। তাইলে তুমিও আমার লাহান কুত্তার বাচ্চা।’
আঁৎকে উঠে ঢোক গিলল লাড্ডু। তাই দেখে কুকুরটা আরো জোরে হাসলো,‘হুনো মিয়া, তোমরা হইলা গিয়া মানুষের বাচ্চা। রাস্তায় মুতবা কেন? তোমাগো কত সুন্দর টয়লেট আসে, বাথরুম আসে হেইহানে এইসব কাম করবা। এইটা হইলো আমার মুতনের জাগা। ঠিক আছে তুমি আমার জাগায় তোমার কাম করসো ভালা কথা। দুই ট্যাকা দ্যাও।’
লাড্ডু ঢোক গিলে বললো,‘টাকা দিয়ে তুমি কি করবে?’
‘ওই মিয়া ট্যাকা দিয়া কি করে তোমারে শিখাই দ্যাওন লাগবো? তুমি আমার জাগায় মুতবা আর ট্যাকা দিবানা হেইডা কেমুন কথা?’ কুকুরটা আরো জোরো জোরে বললো।
লাড্ডু পকেট হাঁতড়ে দেখে তার কাছে কোন টাকাই নেই। তাই দেখে কুকুরটা যেন মজা পায় আরো। বলে,‘হুনো মিয়া, তুমি আজ থেইকা আর কোন মানুষরে কুত্তার বাচ্চা বইলা গালি দিবানা, ঠিকআসে?’
লাড্ডু ভয়ে ভয়ে মাথা নাড়ে। ‘তুমি দেহ,’ কুকুরটা আবার বলে,‘আমরা না খাইয়া থাহি। তোমরা কতো মজার মজার জিনিষ খাও। আর আমরা সারাদিন খালি পেটে ঘুরি। তোমরা দিলে খাই নাইলে খালি পেটে রাইতে ঘুমাইতে হয়। তুমি চিন্তা করসো কুকুরই হইলো একমাত্র প্রানী যে মানুষের উপরে পুরাপুরি নির্ভরশীল। অন্য সব প্রানীই নিজের খাবার নিজে খুঁইজা নিতে পারে, কিন্তু মানুষ না দিলে কুকুর নিজে কোন খাবার খাইতে পারেনা। মানুষের উচ্ছিষ্টের উপরে কুকুররা বাঁইচা থাকে। তোমরা ‘কতো বড়ো বড়ো কথা কও, অথচ দেহ তোমরা কি কখনও চিন্তা করসো তোমরা যহন লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলতাসো, কোটি টাকার গাড়ি চড়তাসো, মদ খাইতাসো, শত কোটি টাকা দিয়া পঞ্চাশ তলা বাড়ি বানাইতাসো তহন একটা কুকুর তোমার সামনের রাস্তায় না খাইয়া শুইয়া আসে?’
লাড্ডু মাথা নাড়ে। না, সেও কখনও এমন করে চিন্তা করেনি।
‘তোমাগো রাজনীতিবিদরা চিল্লায় গলা ফাটাইয়া ফেলায়।’ কুকুরটা দাঁতে দাঁত চিপে বললো,‘হ্যারা তোমাগোরে মিথ্যা সান্তনা দিয়া দ্যাশের কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে। হ্যারা যেমনে ট্যাকা চিবায় তেমনে আমরা হাড্ডিও চিবাইতে পারিনা। আর তোমরা মানুষরে কও কুত্তার বাচ্চা। আরে তোমগো তো কওন উচিৎ রাজনীতিবিদের বাচ্চা। গালি দিবা ঘুষখোরের বাচ্চা, মিথ্যাবাদীর বাচ্চা, মানুষের বাচ্চা, চোরের বাচ্চা, ডাকাতের বাচ্চা। তা না কইরা তোমরা গালি দাও আমাগোর জাতিকে নিয়া। এইটা কি ঠিক?’
লাড্ডু মাথা নাড়ে এপাশ ওপাশ। একদম ঠিক নয়।
দেহ, বিলাইরে তোমরা অনেক উপরে তুইলা রাখসো। কিন্তু বিলাই কি করে? তোমগো খাবার চুরি কইরা খায়। বিলাই তোমগোরে অভিশাপ দেয় য্যান তোমরা অন্ধ হইয়া যাও আর হ্যায় তোমগো খাওন চুরি কইরা খাইতে পারে। হ্যার পরও তোমরা মানুষরে বিলাইয়ের বাচ্চা বইলা কঠিন গালি দাওনা। তোমগো কঠিন গালি হইলো কুত্তার বাচ্চা, ক্যান উত্তর দাও?’
লেজ নাড়তে ইচ্ছে হলো লাড্ডুর। অন্তত সে যদি লেজ নাড়তে পারতো তবে এই কুত্তাটা তাকে কামড় না দিয়ে ছেড়ে দিতে পারতো। এখন তো এমনভাবে দাঁত খিচোচ্ছে যে ভাব কামড় দিয়ে বসবে পাছায়।
‘পারবানা, কোন উত্তর দিতেই পারবানা। কারন তোমরা মানুষরা খুব স্বার্থপর বুঝলা? কুকুরকে তোমরা কও কুত্তা। আরে কুত্তা তো হিন্দী উর্দু শব্দ। তোমরা দেশ স্বাধীন করসো বাংলার কথা ‘বলবা বইলা, অহন হিন্দী উর্দু কও ক্যান। কইবা কুকুরের বাচ্চা। যখন তোমরা কুত্তা কও তখন আয়নার মইদ্যে তাকাইয়া দেহ তোমার মুখটা কেমুন দেহায়। দেখবা মুখটা বাঁইকা গুলিস্থানের পাবলিক টয়লেটের লাহান লাগতাসে।’
লাড্ডু অনেক কষ্টে বলে,‘জ্বি স্যার।’
কুকুরটার মুখটা আনন্দের হাসিতে ভরে যায়। লেজ নাড়তে থাকে সে সুখে। বলে,‘এতোদিন পর একটা সুন্দর শব্দ শুনলাম। এইবার আমার মুখ দিয়ে শুদ্ধ কথা বেরুবে। লাড্ডু বাবাজি, আমার কাছে গতকালের একটা গরুর শুকনো হাড্ডি আছে, খাবে?’
লাড্ডুর গলা দিয়ে বমি উঠে আসে প্রায়। কোন মতে মাথা নাড়ে সে।
‘ওহ তোমরা তো আবার কুকুরের মুখের জিনিষ খাওনা।’ শুদ্ধ ভাষায় বলে কুকুরটা।‘ঠিকআছে, যাও বাকি প্রশ্রাবটা সেরে নাও। আমি জানি আমাকে দেখে তোমার প্রশ্রাব আবার ভেতরে ঢুকে গেছে। এবার শান্তিমতো বাকি কাজ সারো তো।’
লাড্ডু এবার একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে তার আগের স্থানে ফিরে যায়। তারপর প্যান্টের চেইন খুলে আরামে ছাড়তে থাকে দেয়ালের ওপর। ওদিকে কুকুরটা সুখের হাসি হাসছে ওর দিকে তাকিয়ে। আবার বৃষ্টি শুরু হলো নাকি? মুখের ওপর পানি পড়ছে কিসের?
আচমকা কানের কাছে আজানের শব্দ শুনে সচেতন হলো লাড্ডু। আরেনা, আজান নয়, কেউ চিৎকার করছে ক্রমাগত,‘ভাইয়া, ও ভাইয়া, একি করছে দেখে যাও!’
লাড্ডু যেন অচেতন থেকে সচেতন হলো। তার মুখের ওপর পানি ঢালছে কে? ঘুমঘুম আবেশে চোখ খুললো লাড্ডু। পায়ের দিক থেকে পিচকারী দিয়ে পানি এসে ওর চোখ মুখ ভিজিয়ে দিচ্ছে, সেই সাথে ভিজছে চপলের সোফা, দরকারী কাগজপত্র, ল্যাপটপ, মোবাইল, টেবিল। এক নিমিষে পুরোপুরি ঘুম থেকে জেগে উঠলো লাড্ডু গরম পানির ফোয়ারায়। তার প্যান্টের চেইন খোলা। সেখান দিয়ে পিচকারীর মতো পানি বেরিয়ে এসে সোজা ওর মুখ ভেজাচ্ছে। আর ওর সামনে মুখে হাত চাপা দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে চপলের দু’দুটো বোন। তাদের চোখে লজ্জা আর মহা বিশ্ময়।
বৃষ্টি আর ভেজা বাতাসে কখন যে ও ঘুমিয়ে পড়েছিল আর স্বপ্নে দেয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে প্রশ্রাব করছিল। আসলে তখন সে চপলের সোফায় ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে চেপে রাখা প্রশ্রাব আরাম করে ছাড়ছিল।
ফিরে আসা......................রাকিব সামছ শুভ্র
ইউরোপ ভ্রমন ( ফ্রান্স -১ম পর্ব).....................মনিরুল ইসলাম জোয়ারদার
শেষ পর্যন্ত তৌহিদের ইনভাইটেশানে চারজনের পুরো পরিবারের সেনজেন ভিসাটা হয়েই গেল। অবশ্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ফ্রান্স এ্যামবেসিতে জমা দিয়েই ভিসা পেয়েছি। তৌহিদ যেহেতু পর্তুগালে অবস্থান করছে সেহেতু ওখানেই যেতে হবে। ভাবলাম সেনজেন ভিসা পেলাম ২৭টা দেশ ঘুরতে পরবো তবে কেন শুধু একটা দেশ ঘুরবো। এবার খোঁজা শুরু হলো কোন দেশে ঘনিষ্ট স্বজন বাস করে। পেয়েও গেলাম ভাস্তেকে। আমার কাজিনের ছেলে ইটালিতে বসবাস করছে স্ত্রী ও মাকে নিয়ে। ভাস্তেকে বললাম বাবা ইটালিতে আসতে চাই কদিনের জন্য তো হোটেল ভাড়াতো অনেক পড়বে তা তোমার বাসায় কি দু একদিন থাকা যাবে? ভাস্তে রেগে গিয়ে বললো কি বলেন কাকা দু এক দিনতো থাকা যাবে না আপনাকে কমপক্ষে দশদিন থাকতে হবে।আমিতো আপ্লুত। বললাম ভিসা পেয়েছি ৩০ দিনের শুধু ইটালিতে দশ দিন থাকলেতো হবে না। ভাস্তে বললো আগে আসেনতো তারপর দেখা যাক।
সেদিন শাহিদ অফিসে ছিল না। তো কি করা প্রায় একই মুল্যে প্যারিস হয়ে যেতে পারছি তাছাড়া আমার মেয়ে আরশীর প্রচন্ড ইচ্ছা প্যারিস দেখা আমারও ইচ্ছে তাই তো কেটে ফেললাম সামান্য কয়েকটা টাকা বেশি দিয়ে। রিটার্ন টিকেট নিলাম ঢাকা- প্যারিস, লিসবন -ঢাকা। এখন খোঁজা শুরু হলো ফ্রান্সে পরিচিত আত্মীয় কে আছে পেয়েও গেলাম আমার ভায়রা আরাফাতের ছোট কাকা মি.আনোয়ার ওখানে বাস করছে টানা দশ বছর। ফেসবুকে তাঁকে খুঁজে এড করে কথা বলা শুরু করলাম।আরাফাত বলেছিল অসাধারন ভাল মানুষ কথা বলে দেখলাম ভালোর সাথে অসাধারন আন্তরিকও। ভিসা পাবার পর থেকেই ফ্রান্সে আনোয়ার কাকা ইটালিতে সজীবের সাথে প্রতিদিনই ম্যাসেঞ্জারে কথা চলছে অবিরত আর তৌহিদের সাথে যখন তখন। যেহেতু প্যারিসে প্রথমেই যাব তাই আনোয়ার কাকাকে হোটেল বুকিং দিতে বললাম। প্যারিসে আনোয়ার কাকা ও কয়েকজন যুবক মিলে এক ফ্লাট ভাড়া করে বসবাস করে।ফলে আমাদের জন্য হোটেল ঠিক করলেন।
এরপর আমি আর আনান ঘুরে ঘুরে সমস্ত এয়ারপোর্ট দেখলাম তারপর আমরা হ্যান্ড ব্যাগগুলো পাহারা দিলাম আর ডলি আরশী এয়ারপোর্ট ঘুরে দেখলো। বিশাল বড় এয়ারপোর্ট প্লেনের অভাব নেই যাত্রীরও অভাব নেই। এত যাত্রী তবুও হৈচৈ কম। ঠিক চার ঘন্টা পর প্যারিসের পথে বদলি প্লেন ছাড়লো। আবার প্লেনের ভিতর হোস্টেসের দেওয়া খাবার খেয়ে ঘুম।স্থানীয় সময় ছটা ত্রিশ মিনিটে প্যারিস সিডিজি এয়ারপোর্টে পৌঁছে গেলাম।ধীরে ধীরে প্লেন থেকে নেমে এয়ারপোর্টের বাসে উঠে চলে এলাম এক্সিট এরিয়ায়। সবচেয়ে অবাক লাগলো সারা এয়ারপোর্টে ইংরেজি লেখা নেই। ইংরেজি অক্ষরে ফ্রেন্স ল্যাঙ্গুয়েজ।শুধু এ্যারো চিহ্ন দেখে বের হলাম। এ্যারো চিহ্নের পাসে লেখা sorte পরে শুনেছি sorte অর্থ বাহির। ভিজিটর এলাকায় এসে দেখি আনোয়ার কাকা দাড়িয়ে সাথে আরো একজন। দেখে বুকের ভেতর আশ্বাসের চাঁদরটা লম্বা হয়ে গেল। আনোয়ার কাকার সাথে এই প্রথম সরাসরি দেখা এর আগে শুধুমাত্র মোবাইলে কথা ও দেখা হয়েছে।আনোয়ার কাকা জড়িয়ে ধরলো ও পাসের যুবকটির সাথে পরিচয় করিয়ে দিল ও রতন। ওঁদের পাসে দেখি আরো দুজন দাড়িয়ে সামনে এসে পরিচয় দিল সে নির্ঝর অধিকারী ফ্রান্সে বাংলাদেশ দুতাবাসের সেকেন্ড সেক্রেটারি তৌহিদের কলিগ। আমার স্ত্রীকে চেনে ওঁর সাথে কথা বললো। নির্ঝর অধিকারী মোটর কার নিয়ে এসেছে। নির্ঝরের একটা বড় প্যাকেট ঢাকা থেকে আমরা নিয়ে এসেছি যার মধ্যে বাংলাদেশ দূতাবাসে বাংলা নববর্ষ পালনের সরঞ্জাম ছিল। ওঁর গাড়িতে লাগেস সহ আমি আনোয়ার কাকা বাদে সবাইকে উঠিয়ে দিলাম। আমরা দুজনে মেট্রো রেলে হোটেলের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। মেট্রো রেলের কথা অনেক শুনেছি এবার চড়লাম।সে এক অন্যরকম অনুভুতি।
হাসপাতাল রহস্য...................শাহরীন মৌন
আক্ষেপে কথোপকথোন....................আরিফা সানজিদা
দিনমানে দরিয়ায়..................সেমন্তী ঘোষ
ফাগুনের আগুন শিখা.................সেমন্তী ঘোষ
আম্মার বিয়ের শাড়ি...........রাকিব শামছ শুভ্র
মাতৃত্ব..................তুহিন রহমান
প্রকৃতির শোধ...............আরিফা সানজিদা
“তারপর অনেকগুলো আঁকিবুঁকি, কাছে নিয়ে মিলানোর চেষ্টা করল সুহৃদ, বুঝতে পারলো ভালবাসি লেখা। পরের পৃষ্ঠায় ও ঠিক এমন ভাবে আঁকিবুঁকি। একের পর এক পৃষ্টা উল্টাতে লাগল আর লেখাগুলো চোখের সামনে ভেসে উঠতে লাগলো, সুহৃদের মনে হল অক্ষর গুলোর উপর জলের ফোটা ফোটা,পরক্ষণে টের পেল ওর চোখ থেকে টুপটুপ জলের ফোটা গড়াচ্ছে।ও কান্না মুছলো না, ডাইরির মাঝে বিষাদগ্রস্ত হয়ে ডুবে যেত লাগল জলের ফোয়ারা মেখে, অনুপমার অনুভূতির শব্দঁগাথায়।”
সকাল সকাল
কুরিয়ার সার্ভিস অফিস থেকে ফোন এলো, ঘুমে চোখ মেলে তাকাতে পারছে সুহৃদ! অনেকটা
বিরক্তি নিয়ে ফোনটা ধরলো।ওপাশ থেকে শুনতে
পেল আপনার একটা পার্সেল এসেছে, একটু কষ্ট করে নিয়ে যাবেন।সুহৃদ ভাবতে লাগলো কে পাঠালো পার্সেল আবার, পরিচিত কেউ পাঠালে তো ফোন দিয়ে
বলত। অনেকটা অবাক হলো আবার খুব আগ্রহ হলো বিষয়টা
জানার জন্যে।
বিকেলের রোদ পড়ে
এলো, সুহৃদ হাঁটছে কুরিয়ার অফিসের দিকে, ছোট্ট একটা
পার্সেল,
হাতে নিতেই মনে হল একটা
বই। বিরক্তিভাব নিয়ে মনে মনে বলল একটা বইয়ের জন্যে
এতদূর হেটে আসাটাই বৃথা গেল তাও কে পাঠিয়েছে তার ইয়ত্তা নাই।
অনুপমার বান্ধবী
নিলা, সেদিন বিয়ের অনুষ্ঠানের পর ওর রুমে গিয়ে ডাইরি টা পেয়েছিল, অনুপমা শ্বশুর
বাড়ি থেকেই নরওয়ে চলে যাবে, ডাইরিটা যাকে নিয়ে লিখেছিল অনুপমা সেই মানুষটিকে নিলা খুব
ভালভাবেই চিনে,সুহৃদের ঠিকানায় নিলা ই ডাইরিটা পাঠিয়েছে।
র্যাপিং পেপারটা
এক হিঁচকে টানে ছিড়ে ফেলল অনুপম, না এটা বই ছিল না একটি ডাইরি। পৃষ্ঠা ওল্টাতেই বড় বড় অক্ষরে দেখতে পেল লেখা 'Beloved Diary '। তারপর ছোট অক্ষরে এলোমেলো ভাবে লেখা
'' নিয়ন আলোয় ডাইরির ভাজে তোমায় চিঠি লিখছি ডাকবাক্স
বিহীন মনের ঠিকানায়, সবটুকু অনুভূতি দিয়ে লেখা শব্দ ছুঁয়ে দেখো বাতাসে, বেনামী খড়কুটো
ভেবে ছিঁড়ে দিও তখন। আমার কাকতাড়ুয়ার
অপেক্ষার দিনে এই চিঠি, আমি আর তোমাকে ঘিরে থাকা অনুভূতিগুলো পাহারা দিয়ে আগলে রাখে বুকের ভেতর শূন্যতাদের!
লেখাগুলো কেমন
যেন বিঁধে যাচ্ছিল ওর বুকের মাঝখানটায়, অথচ সুহৃদ জানে ও বেশ শক্তপোক্ত মানুষ। ও দ্রুততার সাথে পৃষ্ঠা গুলো উল্টাচ্ছিল কিন্তু লেখাগুলো
গভীর রেখাপাতে মুড়িয়ে দিয়ে যাচ্ছিল। অনুপমার সাথে যোগাযোগ নাই তাও বেশ কয়েকবছর হলো, ঠিক মনেও নাই ওর কথা, তবে মাঝেমাঝে
মনে পড়ত অনুর সাথে এমন টা না করলেও তো হত! এইটুকুই, এর বেশি আর কিছু করেনি সুহৃদ!
দ্বিতীয় পৃষ্ঠা উল্টালো,
শুধু একটা তারিখ লেখা আর লেখা-
'কেমন আছো প্রিয়?'
তারপর অনেকগুলো আঁকিবুঁকি, কাছে নিয়ে মিলানোর চেষ্টা করল সুহৃদ, বুঝতে পারলো ভালবাসি লেখা। পরের পৃষ্ঠায় ও ঠিক এমন ভাবে আঁকিবুঁকি। একের পর এক পৃষ্টা উল্টাতে লাগল আর লেখাগুলো চোখের
সামনে ভেসে উঠতে লাগলো, সুহৃদের মনে হল অক্ষর গুলোর উপর জলের ফোটা ফোটা,পরক্ষণে
টের পেল ওর চোখ থেকে টুপটুপ জলের ফোটা গড়াচ্ছে।ও কান্না মুছলো না, ডাইরির মাঝে বিষাদগ্রস্ত হয়ে ডুবে যেত লাগল জলের ফোয়ারা মেখে, অনুপমার অনুভূতির শব্দঁগাথায়।
অভিযোগ, অভিমান, ঘৃণা, ভালবাসা সব ধরনের অনুভূতিই লেখা ছিল, ওর উদ্দেশ্যই বলা একেকটি শব্দ শেলসমের মত বিঁধতে
লাগল:
"প্রিয়!
ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে,বৃষ্টির ছন্দে নিঃশ্বাসের উঠানামায় তোমার নামের আওয়াজ
ধ্বনিত হচ্ছে মনের গভীরে! তোমাকে সারাদিন মনে নিয়ে হাটি, কাজে মন নাই, ঘুমিয়ে শান্তি নাই, সবখানে তুমি! আমি জানিনা কেন এত এত এত ভালবাসি তোমাকে! যখনি তোমার দুয়ারে ভালবাসা কাঙাল রুপে হাজির হই; অবহেলার সুনামি বইয়ে তাড়িয়ে দাও। কোথাও যাব বল? যাওয়ার জায়গা নাই, আমি ভেঙ্গে ক্ষতবিক্ষত হয়ে যাই, টুকরো অংশ কুড়িয়ে আবার যাই, আবার ভেঙ্গে দেও। ভেঙ্গে ভেঙ্গে আমি গুড়ো হয়ে গেছি সেই কবে, তোমার দুয়ারে পরে থাকি, তুমি ফিরিয়ে দেও। আমি আর তোমার দুয়ারে যাব না, যখনি বলি মনের কথা খুব করে শাসিয়ে দেও, আমার অভিমান অভিযোগ সব যেন আমারই, তুমি হয়ত কাউকে ভালবাস, আমি বুঝতে পারি। আমি তাই চলে যাব অনেক দূরে, দূরে থেকেও ভালবাসা যায়! কই তুমি দেখতে পাচ্ছ? পাবেনা, আমি অনুভব করছি আমি
কত ভালবাসি!এটাই আমার প্রাপ্তি, আমি লিখছি তোমাকে নিয়ে, এখানে কথা ফুরায় না আমার, আর তুমি ধমক দিয়েও ছুড়ে ফেলোনা আমায়, আমার নিত্যদিনের ডাইরি তুমি! ভালবাসার রংতুলি, যেমন খুশি রাঙ্গাবো, কেউ জানবে না, কেউ দেখবেনা, শুধু মনের ভিতরের তুমি আর তোমার ভালবাসার পাগলি আমি
ছাড়া!
কি করছ এখন তুমি? টেলিপ্যাথি দিয়ে খুঁজে দেখতে পাচ্ছি, তুমি বসে আছ আনমনে, কি যেন ভাবছ! কি ভাবছ? আমার কথা কখনো মনে
পড়ে? আমাকে কখনো অনুভব কর তুমি? জানিনা কিচ্ছু জানিনা, আমি শুধু তোমাতেই মগ্ন থাকি, তুমি ভালবাস কিনা উত্তর খুঁজিনি, তবে বুঝেছি তুমি আমাকে কখনওই চাওনি, খুজনি, আমার ব্যথায় নিলাভ হওনি। আমি কেবল ভেঙ্গে চুড়ে আমাকেই বর্ণনা করেছি। আমি এখন আড়ালে চলে এলাম, এবার একটু খুঁজবে কি? আমি ভাল আছি, আমার মন খারাপ নিয়ে
ভাল থাকি,
আমি একদিন চলে যাব ধরা ছোঁয়ার
বাইরে,
এত নিকটে ছিলাম বুঝোনি, তাই হারিয়ে গেলাম অন্য মঞ্জিলে! কথা বলতে
ইচ্ছে করছে, থাক আজ! পাগলের প্রলাপ কে শুনবে আর।।। সাবধানে থেকো, নিজের যত্ন নিও! ( ২৭/১০/২০১৬)
৩০/১০/২০১৬
৩/১১/১৬
তারিখগুলো মিলিয়ে
দেখল সুহৃদ ঠিক তিনবছর আগের লেখা, ভীষণ রকম অবহেলা তোলা ছিল অনুর জন্যে। যা কিছু বলত, কেবল বলা ই ছিল! একেক করে মনে পড়ে যাচ্ছে।মেয়েটার পাগলামি গুলো ভীষণ পীড়া দিয়েছিল তখন, সম্পর্কটা
ভেঙ্গে দিয়েছিল সুহৃদ ই।কিন্তু তখনো তো
অনেক কিছু বলত; কেবল হুম হ্যা বলেই এড়িয়ে যেত!
"তোমাকে খুব মনে পড়ছে, মন খুলে কতদিন কথা বলিনা। কি এক গোপন ব্যথা বয়ে বেড়াচ্ছি, এর নাম জানা নেই! এর শেষ কোথায় জানা নেই। আমি হেরেছি নিজের
কাছে, নিজের ব্যক্তিত্ব এর কাছে, কিন্তু ভালবাসার কাছে আমি বড্ড দূর্বল। এই ব্যথা ঠিক কতদিন বয়ে বেড়াতে হবে জানা নেই। তোমার বুকে মুখ লুকিয়ে কাঁদতে ইচ্ছে করছে খুব। আমার কোন কান্নাই যে তোমাকে স্পর্শ করতে পারেনি। এই নিঃশব্দ কান্না কিভাবে স্পর্শ করত? আমি ভুলতে পারিনা , আমি ছাড়তে পারিনা তাই নিঃশব্দে ভালবেসে যাই। এই ভালবাসার কে কি নাম দিবে জানিনা। আমি একা, এই রাতের ঝিঝিপোকার শব্দের মত একা, এই শব্দ কেউ শুনেনা। আমার দীর্ঘশ্বাস জানে
এই ব্যথার অনল, পুড়ে কেমন দগ্ধ হয়ে
আছে মন। কেন করছি আমি? কিসের জন্যে জানা নাই। এই মায়া থেকে মুক্তি চাই, এই কষ্ট থেকে মুক্তি চাই। আমি বুকভরে নিঃশ্বাস নিতে চাই!
২৩/১১/১৬
৩/১২/১৬
৫/১২/১৬
১৮/১২/১৬
২০/১২/১৬
দু' একলাইন
কবিতার লাইন, দৈনন্দিন কথা এসব লেখা ছিল অনেক পাতায়।সুহৃদ একটা বিষয় খেয়াল করল লেখার কোথাও ঘৃণা নাই, কেবল অভিমান আর অভিযোগ আর
শূন্যতার ছড়াছড়ি। এভাবেই কি মানুষের
অনুভূতি গুলো হয় অপরজন ছেড়ে গেলে? এই মানুষটি কে সুহৃদ কষ্টের সিঁড়িতে তুলে দিল? খুব
অপরাধী লাগছে।
সুহৃদ ভাবতে লাগল এই অপরাধী লাগা এই অনুশোচনা শব্দে
পরিণত করলে কেমন হত? অনুর অভিমান রা খিলখিলিয়ে হাসতো? অনুর অভিমান ভালবাসার কাছে
এই অনুশোচনা চোখ মেলে তাকাবার সাহস পাবেনা। অনু কি এখনো এভাবে লিখে? কিভাবে লিখবে ডাইরীটা তো এখন সুহৃদের কাছে, বাকী
পাতা গুলো যদি লিখত কেমন হত ওর শব্দগুলো? সুহৃদের এই মুহুর্তে সে অনুভূতিগুলো খুব ছুঁয়ে
দিতে ইচ্ছে করছে, বলতে ইচ্ছে করছে আমি যাইনি কোথাও।
অনু বাকি পৃষ্ঠাগুলো
কেন লিখলোনা? সুহৃদের মনে হল এই পৃষ্ঠাগুলো অনুশোচনায় ভরিয়ে দেয়ার জন্যেই অনু লিখেনি। অনু কি এখনো এমন করে চায়? মানুষ একসময় অনুশোচনা
করে পিছনের আকুতির জন্যে, সেই অনুশোচনা গুলো যদি হয় নিজেকে অপরাধী ভাবা তবে সেটার থেকে
পরম তিক্ত কষ্ট আর নেই। এই অনুশোচনা
সুহৃদের পাওনা ছিল!
অনু জিতে গেছে, সুহৃদ স্পষ্ট দেখতে পেল ওর অভিমানরা হাসছে। সুহৃদ পৃষ্ঠা গুলো উল্টাতে লাগল! এ কেমন শাস্তি! নিজের স্বার্থের জন্যে সেই অনুকে কষ্ট দিল! ডাইরীটা স্পর্শ করতে ওর ভয় করছে এখন, এই বুঝি শেষ পাতায় লেখা ভেসে উঠবে আমি তোমাকে ক্ষমা করিনি! অনু যদি ক্ষমা করে দেয় তবে প্রকৃতি? প্রকৃতি তো কাউকে ছাড় দেয়না! প্রকৃতি এই শোধ তুলে দিল? নিজের ভিতর নিজে পিষ্ট হওয়া? প্রকৃতির শোধ বড়ই সুষ্ঠ.......