আনন্দ বৃদ্ধাশ্রম...................শাহানা জাবীন সিমি

আনন্দ বৃদ্ধাশ্রম...................শাহানা জাবীন সিমি
২০৫০ সাল, জানুয়ারী মাস। শীতের এক দুপুরে শামসুর রাহমানের লেখা কবিতা পড়েছিলেন শায়লা বারী।'যেদিন মরবো আমি, সেদিন কি বার হবে বলা মুশকিল।শুক্রবার? বুধবার? শনিবার? নাকি রবিবার?যে বারই হোক,সেদিন বর্ষায় যেন না ভেজে শহর,যেন ঘিনঘিনে কাদা না জমে গলির মোড়ে।সেদিন ভাসলে পথঘাট,পূন্যবান শবানুগামীরা বড়ো বিরক্ত হবেন।'এই পর্যন্ত পড়ে বইটি বন্ধ করে রাখলেন তিনি। কি অসাধারণ অভিব্যক্তি কবির! কত চিন্তা শবানুগামীদের জন্য।...

সাদৃশ্যকরন...................................তুহিন রহমান (ঈদ সংখ্যা ২০২০)

সাদৃশ্যকরন...................................তুহিন রহমান (ঈদ সংখ্যা ২০২০)
‘শালা একটা কুত্তার বাচ্চা!’ ‘আরে কাকে বলছিস?’ ‘তোকে না।’ ‘আমাকে না তো বুঝলাম কিন্তু কাউকে না কাউকে তো বলছিস।’ ‘হ্যাঁ বলছি একজনকে। আমার পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে এখন দিতে চায়না। বলে এগুলো নাকি এখন দিতে পারবে না।’ ‘তা তুই কি বলেছিস?’ লাড্ডু জানালা দিয়ে বাইরে তাকালো। ঝমঝম বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সবাই রাস্তা ছেড়ে পালাচ্ছে যেদিকে পারছে। একটু ঝড়ো হাওয়াও আছে সাথে। সামনের গাছগুলো দুলছে। সামনের মোটা ইলেকট্রিক তারের...

ফিরে আসা......................রাকিব সামছ শুভ্র

ফিরে আসা......................রাকিব সামছ শুভ্র
তেতাল্লিশ বছরপর ক্যাটকেটে কমলা রঙের খামটা হাতে নিতেই রহমান সাহেবের কেমন অস্থির লাগছিলো। ঘেমে নেয়ে একাকার, হাত কাঁপছে। কুরিয়ারের ছেলেটা কেমন ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেছে। বারবার জিজ্ঞেস করছে, স্যার শরীর ঠিক আছে তো?রহমান সাহেব উত্তরে শুধু মাথাটা একটু উপর নিচ করলেন। ছেলেটার দেখানো জায়গায় প্রাপকের ঘরে কোনরকমে সিগনেচার করে দিলেন। দরজা বন্ধ করে বসার ঘরের সোফায় ধপাস করেই বসে পরলেন। চোখের সামনে ভেসে উঠছে সেইসব...

ইউরোপ ভ্রমন ( ফ্রান্স -১ম পর্ব).....................মনিরুল ইসলাম জোয়ারদার

ইউরোপ ভ্রমন ( ফ্রান্স -১ম পর্ব).....................মনিরুল ইসলাম জোয়ারদার
প্রিয় শ্যালক তৌহিদ বললো দুলাভাই পর্তুগালে আর বেশি দিন নাই ইউরোপের বাইরে হয়তো অন্য কোথাও ট্রান্সফার করে দিবে সুতরাং আমি থাকতে থাকতেই পর্তুগাল বা পারলে ইউরোপের কয়েকটা দেশ ঘুরে যান। ঢাকায় তৌহিদের সাথে দেখা হলেই বলতাম তুমি শালা যেখানে যেখানে পোষ্টিং পাবে আমি সেখানে সেখানেই যাব। তোমার পিছু ছাড়বো না।ফলে তৌহিদের এই অফারটি এড়িয়ে যেতে মন চাইছিল না। বললাম ব্যবস্থা কর তোমার বুবু ভাগনে ভাগনি সহ যাব।শেষ পর্যন্ত...

হাসপাতাল রহস্য...................শাহরীন মৌন

হাসপাতাল রহস্য...................শাহরীন মৌন
আগের পর্বের রেশ ধরে....সে ফিরে তাকাতেই দেখলো তারই সহকারী শুভ।: ওহ্, তুই! আমি ভাবলাম আবার এখানে কে আমাকে চিনে ফেললো।: (সামান্য হেসে) তা ছদ্মবেশে এলেই পারতে!: হ্যাঁ, তাই ভাবছি। এখন যখন প্রায়ই এখানে আসতে হবে তখন ছদ্মবেশ নিতেই হবে। তো তোর কাজটা হয়ে গেছে?: হ্যাঁ, বেশ কিছু তথ্য আমি জোগাড় করেছি। ফিরে গিয়ে বলছি, চলো।: দাঁড়া, নার্সটা সেই কখন ভেতরে গেছে, এখনো আসার নাম নেই।: কেনো? ঢুকতে দিচ্ছে না ভেতরে?: নাহ,...

আক্ষেপে কথোপকথোন....................আরিফা সানজিদা

আক্ষেপে কথোপকথোন....................আরিফা সানজিদা
-কিভাবে সময় কাটাচ্ছো ইদানীং? -এইতো লেখালিখি,টুকটাক গল্প পড়ি, বইয়ের ভাজে ভবিষ্যৎ খুঁজি, বিকেল বেলায় সূর্যের ডুবে যাওয়া দেখি আর রাতের আধারে বেলকনিতে বসে অন্ধকার দেখি!! আর তোমার তো বেশ যাচ্ছে দিন, বন্ধু বান্ধব হৈ,হুল্লোড় বেশ তো কাটাচ্ছো তাইনা?হাহা সময় পাও এসবের মাঝে নিজের অস্তিত্ব খোঁজার? -ভালোই তো হেয়ালি সুরে কথা বলতে শিখেছো দেখছি! কাব্যিক সুরে, তো কাব্যগ্রন্থ বের করলেই তো পার! - হাহা!...

দিনমানে দরিয়ায়..................সেমন্তী ঘোষ

দিনমানে দরিয়ায়..................সেমন্তী ঘোষ
আশ্চর্য সৌন্দর্য আর বৈচিত্র্যে ভরা অথৈ-নীলের অপার সাগরবেলা প্রত্যেকবারই হৃদয়ের আঙিনায় প্রশান্তির ঢেউ তোলে।কখনো তার উত্তাল সৃষ্টির শৈল্পিক আদল আবার কখনো বা বিপুল বিশালতার মাঝে প্রাণবন্ত নির্মল রূপ। নারিকেল বীথিকায় ছাওয়া রূপালী বালুকাবেলায় কেরালার কোভালাম জলনিধি তেমনি এক শান্ত সমাহিত রুপমুগ্ধতা নিয়ে অভিসারী মনে কল্পকাহিনী রচনা করে। ভারতের দক্ষিণ ভাগের পশ্চিমঘাট পর্বতমালার মধ্যে অবস্থিত কেরালা...

ফাগুনের আগুন শিখা.................সেমন্তী ঘোষ

ফাগুনের আগুন শিখা.................সেমন্তী ঘোষ
দোল পলাশের পদাবলী, আবির রাঙা কেশঅভিসারে মাদল সুরে ফাগুনেরই রেশ---আগুনের সুরে পলাশের ডাকে মন চলে অভিসারে। প্রকৃতিতে লাগে মধুর বসন্তের সাজ সাজ রব। দখিনা বাতাসের সাথে ডানা মেলে ইচ্ছেরা পাড়ি দেয় স্বপ্ন সুখের সন্ধানে।গগনচুম্বী অট্টালিকার দৃষ্টিনন্দন থেকে তাই দিন কয়েকের ছুটি নিয়ে প্রতিবছরই ফেব্রুয়ারি মার্চ মাস করে আমরা পৌঁছে যাই বড়ন্তি তে।একদিকে যেমন অরণ্যের অসীম রহস্যময়তা তার শান্ত শ্যামল সৌন্দর্য...

আম্মার বিয়ের শাড়ি...........রাকিব শামছ শুভ্র

আম্মার বিয়ের শাড়ি...........রাকিব শামছ শুভ্র
“ বুবুর উচ্ছ্বসিত হাসি দেখে খুশী হলেও কেমন একটা কষ্টও অনুভব করছি। আম্মা বুবুর জন্য জামা সেলাই করছে। আর আমি, আঁখি আর পাখি হা করে তাকিয়ে আছি। একটা না দুইটা না একসাথে তিন তিনটা জামা বানিয়ে দিচ্ছে। ”আমরা চারবোন, ভাই নেই আমাদের। ভাইয়ের আশায় চার সন্তানের মা-বাবা হয়েছেন কিন্তু ছেলে হয়নি। বুবু রাখি, আমি সাখি, আমার পরে আঁখি আর পাখি। আমরা মফস্বলে বসবাস করি। বাবা সরকারি চাকুরি করেন। দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তা...

মাতৃত্ব..................তুহিন রহমান

মাতৃত্ব..................তুহিন রহমান
সরকারী অফিসের পেছনের ডুমুর গাছের পাতা বুনে ছোট্ট একটা বাসা বানিয়েছে দুটো টুনটুনি পাখি। টোনা আর টুনি। টোনার নাম চিরিং। আর টুনির নাম রুরু। দু’জনেই বেশ দুরে থাকে। তাদের জায়গাটা নিরাপদ নয় তাই তাদের জঙ্গল থেকে বেশ দুরের এই সরকারী এলাকার গাছে বাসা বেঁধেছে চিরিং আর রুরু। গাছের ওপরের অংশে, যেখানে মানুষ নাগাল পাবেনা সেখানে কয়েকটা পাতা এক করে তুলোর চিকন বুনট দিয়ে বাসা বানিয়েছে দু’জন। বাসা বানাতে লেগেছে পুরো...

প্রকৃতির শোধ...............আরিফা সানজিদা

প্রকৃতির শোধ...............আরিফা সানজিদা
 “তারপর অনেকগুলো আঁকিবুঁকি,  কাছে নিয়ে মিলানোর চেষ্টা করল সুহৃদ, বুঝতে পারলো ভালবাসি লেখা। পরের পৃষ্ঠায় ও ঠিক এমন ভাবে আঁকিবুঁকি। একের পর এক পৃষ্টা উল্টাতে লাগল আর লেখাগুলো চোখের সামনে ভেসে উঠতে লাগলো, সুহৃদের মনে হল অক্ষর গুলোর উপর জলের ফোটা ফোটা,পরক্ষণে টের পেল ওর চোখ থেকে টুপটুপ জলের ফোটা গড়াচ্ছে।ও কান্না মুছলো না, ডাইরির মাঝে বিষাদগ্রস্ত হয়ে ডুবে যেত লাগল জলের ফোয়ারা ...