আহমেদ চঞ্চল |
স্বপ্ন
চলো দুজন হকার হবো বনগাঁ লোকালে
সকালে বেড়িয়ে যাবো ফিরবো বিকালে,
হাসিমুখে বেড়াবো বেচে কবিতার বই
স্বপ্নের ফেরিওয়ালা সাধারন তো নই।
বিনয়, সুনীল, শক্তি আর জয় গোস্বামী
কবিগুরুও থাকবে কাছে তবে তা দামী,
মাঝে মাঝে আওড়াবো প্রিয় কোন কবিতা
নিমিষেই ফুরাবে বই যা ছিল সব ই তা।
শেষ ট্রেনে ক্লান্ত দেহে চাঁদপাড়াতে এসে
তুমি হঠাৎ নেমে যাবে জনস্রোতে ভেসে,
আমি যাবো একা একা সেই হৃদয় পুর
কিছু স্বপ্ন নিকট অতি কিছু অনেক দূর।।
অপেক্ষা
কারো কাছে দোজখ কারো কাছে বেহেশত কেউ বা বলে পৃথিবী
আমি বলি এই মহা জংশনের নাম হতে পারে অপেক্ষালয়,
এখানে আমি, তুমি আমরা কারো না কারো জন্য অপেক্ষারত।
ইছেপুর ঘাটের কাছে ঠায় দাঁড়িয়ে ভুবন মাঝি অপেক্ষা করে
কবে কুমার নদীতে আবার সেই ভরা যৌবন ফিরে আসবে
শুরু হবে পারাপার, ঘাট পাড়ানি বেড়ে গিয়ে পাঁচ টাকা হবে।
অপেক্ষা করে নবীন ডাঙ্গার কিশোরী গায়ের বধু রোজিনা
আর বছর দুয়েক গেলেই ঋণের সব টাকা শোধ হয়ে যাবে,
তখন চাইলেই দেশে ফেরত আসতে পারবে তার প্রিয় স্বামী।
রুহানীপুর হাফেজিয়া মাদ্রাসায় আঙ্গুলে হিসেব কষে এক শিশু
আসছে অগ্রহায়ণেই তার মাথায় আকাঙ্ক্ষিত পাগড়ি উঠবে,
তখন নির্দ্বিধায় সে ফিরে যেতে পারবে তার মায়ের কাছে।
আমি জানি না আমার জন্য কেউ কখনো অপেক্ষা করে কিনা
হৃদয়পুরের পরের স্টেশনে পথ চেয়ে থাকে কিনা কোন মুখ?
যদি কেউ থাকে তবে এ জগতে আমিও ভাগ্যবানদের একজন।
জগত সংসার তো মহা জংশন যার নাম হতে পারে অপেক্ষালয়
আমি তুমি সবাই অপেক্ষারত কারো না কারো অপেক্ষায়,
কারো অপেক্ষা সুখের, কারো অপেক্ষা অনাদি অনন্ত কালের।।