হাসপাতাল রহস্য...................শাহরীন মৌন

আগের পর্বের রেশ ধরে....

সে ফিরে তাকাতেই দেখলো তারই সহকারী শুভ।
: ওহ্, তুই! আমি ভাবলাম আবার এখানে কে আমাকে চিনে ফেললো।
: (সামান্য হেসে) তা ছদ্মবেশে এলেই পারতে!
: হ্যাঁ, তাই ভাবছি। এখন যখন প্রায়ই এখানে আসতে হবে তখন ছদ্মবেশ নিতেই হবে। তো তোর কাজটা হয়ে গেছে?
: হ্যাঁ, বেশ কিছু তথ্য আমি জোগাড় করেছি। ফিরে গিয়ে বলছি, চলো।
: দাঁড়া, নার্সটা সেই কখন ভেতরে গেছে, এখনো আসার নাম নেই।
: কেনো? ঢুকতে দিচ্ছে না ভেতরে?
: নাহ, এখন নাকি ভেতরে ঢোকা যাবে না। কিন্তু আমি ভাবছি যদি ঢুকতে না দেয়, তাহলে কীভাবে আমি ভেতরে যাবো।
: উমমম, আবির ভাই, নার্সটাকে হাত করা যায় না? মানে যদি কোনো ভাবে ওকে আমরা ম্যানেজ করতে পারতাম তাহলে ব্যাপারটা সহজ হতো না? এরা তো টাকার জন্যই খাটে।
: না, না। এটা করা যাবে না। এই হাসপাতালের সাথে জড়িত কাউকে কিচ্ছু জানানো যাবে না শুভ। কারণ, এরা হতেও পারে এই অপরাধের সাথে যুক্ত। তাই এই রিস্কটা নেয়া যাবে না।
: হ্যাঁ, কিন্তু যদি আমাদের ঢুকতে না দেয়, তবে আমরা কীভাবে কেবিনগুলো দেখবো বলো?
: একটা ব্যবস্থা তো করতেই হবে। দেখি না, আগে নার্সটা আসুক। কি বলে শুনি।
: হুম।
ওরা দু’জন হাসপাতালের এক কোণায় দাঁড়িয়ে কথা বলতে থাকে। এরই মধ্যে নার্স ফোনে কথা শেষে ওদের কাছে চলে আসে। শুভকে দেখে সন্দেহজনক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। আবির বুঝতে পেরে বলে,
: ও আমার ভাই, শাকিব। ইচ্ছা করেই আসল নামটা গোপন করে আবির। আচ্ছা, আমাদের যেতে দেবেন না ভেতরে? আমাদের তো খুবই দরকার।
: দেখেন, আমি তো সাধারণ নার্স। আমাকে যেমন নির্দেশ দেয়া হয় আমি তেমনই করি। আমি ওপর মহল থেকে অনুমতি নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তাঁরা অনুমতি দিলেন না। আপনারা জিনিসগুলোর মায়া ছেড়ে দিন। আর এমনিতেও আপনারা ওগুলো পেতেন না। কারণ, ডেডবডি সরানোর পরে কেবিন ভালোভাবে পরিষ্কার করে ফেলা হয়। কিছু জিনিস থাকলে তা তাদের বাড়ির লোকই নিয়ে যায়, নয়তো আমরা ফেলে দেই। তাই বলছি, আপনাদের জিনিসও আপনারা পাবেন না।
: এমন বলবেন না। আমাদের যে ওগুলো খুব দরকার। একটু দেখেন না যদি ব্যবস্থা করতে পারেন ।
: আহা! আপনাদের বলছি না অনুমতি নেই! কেনো বায়না করছেন? আর কি এমন জিনিস যেটা না হলেই নয়? মানুষটাই তো মারা গেলো। আর কি চান বলেন তো। আমার কাজ আছে। আমাকে যেতে দিন। এই বলে নার্স ওখান থেকে চলে গেলো।
: আবির ভাই, কি ভাবছো? কি করবে এবার?
: বুঝতে পারছি না। তবে গণ্ডগোল যে বড় সড় সেটা আন্দাজ করতে পারছি ভালোভাবে।
: আমাদের অন্য রাস্তায় হাঁটতে হবে বুঝলে?
: হুমম, তাই ভাবছি। চল, আজকের মতো ফিরে যাই। কিন্তু কাল আবার আসবো।

আবির আর শুভ হাসপাতাল থেকে চলে আসে। শুভ, আবিরের সহকারী। ছোট ভাইও বলা যায়। একটা পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে ল পড়ছে। আর আবিরকে কাজে সহায়তা করছে। এরই মধ্যে আবিরের সাথে বেশ কিছু কেস সল্ভও করেছে। তাই আবির তাকে অনেক ভরসা করে। গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু কাজের দায়িত্ব শুভ পালন করে। এইতো, এই কেসেও আবিরকে সাহায্য করছে।
শুভর বাবা, মা গ্রামে থাকেন। আর আবিরের বাবা মা অনেক আগেই মারা গেছেন। চাচার কাছেই মানুষ হয়েছে আবির। বেশ কিছুদিন হয়েছে চাচাও মারা গেছেন। এখন আবির বলতে গেলে একাই। তাই আবির আর শুভ একসাথেই থাকে। ভালোই হয়েছে একদিক দিয়ে। বাসায় তারা ছাড়া আর কেউ থাকে না, এতে তাদের কাজে সুবিধা হয়। বেশ কয়েকদিন হলো ওরা বাসায় ছুটা বুয়া রেখেছে। সকালে এসে কাজ করে দুপুরে চলে যায়। বুয়া অবশ্য জানে না যে ওরা গোয়েন্দা। বাড়তি সতর্কতা নিতেই হয়। কারণ শত্রুরা সব সময় তথ্য চায়, আর তাই এদেরকেই আগে হাত করে।

হাসপাতাল থেকে ফিরে শুভ আর আবির বারান্দায় বসে চা নিয়ে। শুভ আলাপ শুরু করে,
: এই নিয়ে মোট ৯টা সুইসাইডাল কেস হয়েছে এই হাসপাতালে।
: ৯ টা !!
: হুমম, ৯ টা। আর সবচেয়ে বড় আশ্চর্যজনক কি জানো? এই ৯ জনই কিছু না কিছু রোগ নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এসেছিলো।
: হাসপাতালে সবাই তো চিকিৎসার জন্যই আসে।কিন্তু এই ৯ জনই কেনো?
: আরেকটা কথা। সবারই মৃত্যু রাত ১ টা থেকে ৩ টার মধ্যে।
: অদ্ভুত তো। দেখো আবির ভাই,আমার যতো দূর ধারণা হাসপাতালে কিছু একটা ঘটনা আছেই।
: তা তো আছেই শুভ। বড় ধরণের খেলা চলছে ওখানে। কিন্তু,
: কিন্তু?
: আমি ভাবছি, এই যে মানুষগুলো সুইসাইড করেছে তাদের পরিবারের কেউ কেনো থানায় জানায়নি?
: তুমি গিয়েছিলে থানায়?
: হ্যাঁ,আগে থানায় গিয়েছিলাম। অফিসার বললেন যে,উনি এমনটা শুনেছেন কানাঘুষা কিন্তু কেউই নাকি উনার কাছে অভিযোগ দায়ের করেননি।
: এটা কীভাবে সম্ভব? না,মানে মানছি যে হাসপাতাল এই মৃত্যুগুলোর সাথে হয়তো জড়িত। কিন্তু তাই বলে ভিক্টিমের পরিবারও? উনাদের কি স্বার্থ?
: দেখ, কার কী স্বার্থ, কে কেনো কী করেছে এগুলোর উত্তর জানতে হলে আমাদের আগে হাসপাতালের ভেতরে যাওয়াটা খুব জরুরি। মারা যাবার আগে তারা যে কেবিনগুলোতে ছিলো সে জায়গাগুলো দেখা দরকার একবার।
: কিন্তু আমাদেরকে কোনো কারণ ছাড়া ওরা ঢুকতে দেবে না। ছদ্মবেশ নিতেই হবে।
: সেটাই ভাবছি। শুভ, তুই একটু থাক। আমি চট করে আসছি। বলেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলো আবির।
(চলবে........)

শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট
Nazmul Hasan
October 27, 2020 at 11:41 PM

Tarpor ki.... Porer chapter e jan taratari

Reply
avatar
October 28, 2020 at 12:25 AM

Keep patience . Next part will be given . Thank You.

Reply
avatar
রাব্বী উল ইসলাম, ফুকহ, মালয়শিয়া
October 28, 2020 at 9:52 AM

বড় করে লিখলে ভাল হত। দুদিন পর মনে থাকেনা কি পড়েছি।

Reply
avatar
বসিরুল হক। দনিয়া শনির আখড়া
October 28, 2020 at 8:14 PM

প্রথম গল্পটা তো খুজলাম পেলামনা

Reply
avatar
October 28, 2020 at 9:58 PM This comment has been removed by the author.
avatar
October 28, 2020 at 9:59 PM

September er 27 tarike 1st part deya hoyechilo

Reply
avatar
সাইফুল ইসলাম
October 28, 2020 at 10:47 PM

ছবির লোকটা কে রে বাবা! চেনা চেনা লাগছে। বলিউডের কোন নায়ক নয়তো?

Reply
avatar
Anonymous
October 29, 2020 at 10:12 PM

ডিটেকটিভ গল্পের সুত্র খুঁজে পাওয়া গেলনা কোথাও। প্রথম পর্ব কিছুটা গল্পের মতো হলেও পরেরটায় যেন সুর হারিয়ে গেল। আরোকটু বড় কর লিখলে হয়ত বোঝা যেত কিন্তু এতোটা সংক্ষিপ্ত যে পড়তে ইচ্ছে করেনা।

Reply
avatar
October 29, 2020 at 11:06 PM

Okay . Noted . but Shob porbei jodi Same detective golpo dei tahole golper character der chena hobe kivabe .

Reply
avatar
Anonymous
October 30, 2020 at 1:18 AM

তবুও পাঠকের কথা চিন্তা তো করবেন।

Reply
avatar
October 30, 2020 at 1:29 AM

Noted . In sha Allah Next porbo theke amon hobe na ...

Reply
avatar
নির্মলেন্দু গুন।
October 30, 2020 at 9:12 AM

����ভালো, তবে তোমাকে আরেকটু কাছে যেতে হবে লেখার। ডিটেকটিভ গল্পের অনুসারীরা তেমন গল্পই চায় যা তাকে বেঁধে রাখবে পাতার সাথে, ক্ষনে ক্ষনে শিউরে উঠবে। কোনদিক দিয়ে কি হয়ে গেল কেউ টেরটিও পেলনা।

Reply
avatar