ক্ষনিকের সুখ......................মুশফিকুর রহমান আবীর (ঈদ সংখ্যা ২০২০)

মুদ্রে অবস্থানরত পিপাসার্ত ব্যক্তি, যদি তার পিপাসা মেটানোর জন্য সমুদ্রের পানি পান করে থাকে তাহলে সেই পানি কখনোই তার তৃষ্ণা নিবারণ করতে পারে না। বরং তা তার পিপাসার্ততা বাড়িয়ে দেয়। এমনিভাবে মানুষের লোভ লালসাও কখনো তাকে সত্যিকারের সুখের সন্ধান দিতে পারে না।
নেশার সমুদ্রে বিচরণ করা ব্যক্তি, কখন যে নেশার সমুদ্রের নিমজ্জিত হয়ে পড়ে তা সে নিজেই উপলব্ধি করতে পারে না। নিজের কষ্ট লাঘবের আশায় সে বরংবার নেশা করতেই থাকে। কিন্তু সেটা তার কষ্ট বাড়ানো ছাড়া কমাতে পারেনা। ক্ষনিকের স্বর্গতুল্য সুখের জন্য সে তার স্বর্ণ-মন্ডিত ভবিষ্যতকে নেশার পাণে বিসর্জন দেয়।

শত কষ্ট স্বীকার করে, নিজের সুখ বিসর্জন দিয়ে তিল তিল করে নিজের সামান্য সম্পদ যদি কেউ অন্যায় ভাবে চুরি করে বা ছিনিয়ে নেওয়াটা এ দুনিয়ায় সবচেয়ে পাপের কাজ। অন্যের সম্পদ আত্মসাত করে বা অন্যের সম্মান নিষ্পেষিত করে সুখের আকাশচুম্বী অট্টালিকা তৈরি করা অনেকটা তাসের ঘর বানানোর মাধ্যমে নিজের কবর নিজে খোড়ার মত অবস্থা হয়।মানুষকে দেওয়া কষ্ট গুলো লোভে বশীভূত ব্যক্তির জীবনে চোরাবালির সাদৃশ্যতা ধারন করে। আত্মসাত করা মানুষের আকাশচুম্বী অট্টালিকা কিংবা দামি মার্সিডিজ গাড়ি মরীচিকার মত তার মরুভূমিময় জীবন থেকে হারিয়ে যায় তা সে কল্পনাও করতে পারে না।

রাস্তায় ভবঘুরে কুকুরটিকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মারার ক্ষণিকের সুখ অর্জনকারী লোকটির ছেলে কখন যে বড় হয়ে তার বৃদ্ধ বাবাকে পেটানো শুরু করে তাও তার কল্পনা অতীত।

নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রীপ্রাপ্ত সরকারি কর্পোরেট অফিসার যখন তার সামান্য স্বাক্ষরের জন্য সামান্য স্বল্প বেতনের চাকরি করা কেরানির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ দাবি করে, তখন তার আদরের রাজকন্যার জুয়াখোর স্বামী যৌতুকের আশায় তার গোলাপী মুখে, গলায় পাঁচ আঙুলের দাগ বসিয়ে দেয় তা সে ভাবতেও পারে না।
তাই দীর্ঘস্থায়ী সুখের জন্য নিজের ক্ষণস্থায়ী অন্যায়ভাবে প্রাপ্ত সুখ বিসর্জন দেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট
Anonymous
July 25, 2020 at 9:08 AM

সত্যিকার কথা বলেছেন ভাই। এই হলো আসল সত্য।
আবদুর নুর সঞ্চয়
বারেকপুর চৌধুরীবাড়ি
সিরাজগঞ্জ

Reply
avatar
September 11, 2020 at 1:03 PM

লেখাটা দারুন লিখেছেন। আধ্্যাত্কি কথা

Reply
avatar