উপস্থিত সুধী মণ্ডলী, আপনাদের সামনে এখন গল্প পাঠ করতে আসছেন জান্নাতুল ফেরদৌস ইভা।
নাম ঘোষণা করার সাথে সাথে ইভা মঞ্চের পাশে ডায়াসের দিকে এগিয়ে যায়, অবশ্য আগেই সে মঞ্চে যাওয়ার জন্যে প্রস্তুত ছিলো। পূর্বের আবৃত্তিকারের নাম ঘোষণার সময় সঞ্চালক বলেছিলেন,
-- এরপর মঞ্চে আসার জন্যে প্রস্তুত থাকবেন ইভা, জান্নাতুল ফেরদৌস ইভা।
সে কারণেই মানসিক প্রস্তুতি ছিলো ওর। এই প্রথম ভরা হল রুমে গুনি জনের সামনে মঞ্চে দাঁড়িয়ে গল্প পড়ে শুনাবে ইভা। এর আগে অনেকবার কবিতা আবৃত্তি করেছিলো। কখনো নিজের কবিতা, কখনো বিখ্যাত কবিদের কবিতা। প্রথম যেদিন ইভা নিজের কবিতা নিয়ে মঞ্চে উঠে ওর দুই হাঁটু কাঁপতে থাকে। সেদিন পাশে ছিলো ফয়সাল আরেফিন। ফয়সালের অনুরোধেই নিজের কবিতা নিয়ে মঞ্চে উঠেছিলো। আজ ইভার পাশে নেই আরেফিন, শুধু পাশে নয় আরেফিন এখন শত শত মাইল দূরে।
স্টেইজের ডানপাশে রাখা ডায়াসে গিয়ে দাঁড়ায় ইভা। ওর বামপাশে প্রায় ১০/১২ টা চেয়ার, শুধু চেয়ার বললে ভুল হবে, এগুলো গদি ওয়ালা চেয়ার। মাননীয় প্রধান অতিথি বিশেষ অতিথি সহ গুণীজনরা বসে আছেন চেয়ার গুলোতে। গুণীজনের কাতারে রাজনৈতিক ব্যক্তিরাও রয়েছেন। ইভা বলতে শুরু করলো,
-- উপস্থিত সবাইকে শেষ গোধূলির মায়াময় শুভেচ্ছা। আমি জান্নাতুল ফেরদৌস ইভা, পড়ে শুনাচ্ছি আমার লেখা গল্প "পেন্সিল রাবার"।
এই বলেই শুরু করে গল্প পড়া, গল্পটা ২৫০/৩০০ শব্দের হবে। গল্পের অনেক জায়গায় পেন্সিল রাবার শব্দগুলো ছিলো। পড়া শেষ, পুরো হল রুমে হাততালি পড়ে। ইভা মঞ্চ থেকে নামার জন্যে পা বাড়ালো ঠিক তখনি মঞ্চ থেকে এক অতিথি বলেন,
-- মঞ্চে উঠে কিছু বলার আগে বা পড়ার আগে নিজেকে তৈরি করে নিতে হয়। উচ্চারণ ঠিক করে করতে হয়। গল্প পড়ুয়া বার বার পেন্সিল শব্দটা উচ্চারণ ভুল করেছে, সে পেন্সিল এর জায়গায় পেনচিল উচ্চারণ করেছে। এটা ঠিক নয়, ভুল শব্দটা কানে খুব লাগছিলো।
কে এই সমালোচনা করছেন, তার কন্ঠ শুনেই বুঝে ইভা। মঞ্চ থেকে সোজা এসে নিজের জায়গায় বসে। যে হল রুমের সবাই হাততালি দিয়েছে গল্প পড়া শেষ হলে তাদের অনেকেই এখন ইভার দিকে তাকাচ্ছে। এতে ইভার কোন সংকোচ হচ্ছে না। সে স্বাভাবিক ভাবেই বসে থাকে। পরের গল্প পড়ুয়ার নাম ঘোষণা হয়, তিনি মঞ্চে উঠেন। ইভার খুব তাড়া আছে বলেই সঞ্চালক ওকে আগে মঞ্চে উঠতে দেয়। পরের গল্পকারের গল্পটা শুনে ইভা হলরুম ত্যাগ করে।
পরদিন আরেকটা প্রোগ্রামে সেই বিশেষ অতিথি উপস্থিত থাকেন, ইভাও নিমন্ত্রণ পেয়ে সেখানে যায়। একটু সুযোগ পেয়ে বিশেষ অতিথির পাশে যায়। অমন বিশেষ ব্যক্তিরা কাউকে মনে রাখা অসম্ভব, মনে তাদের না থাকারই কথা। ইভা সালাম দিয়ে পাশে বসে, নিজের পরিচয় দেয়, উনি চেনার চেষ্টা করছেন। তখনি ইভা বলে,
-- গতকাল মঞ্চে যে পেন্সিল উচ্চারণ করতে পারেনি, আমিই সে।
-- ও আচ্ছা, কাল কি মন খুব খারাপ হয়েছিলো।
-- না মন খারাপ হয়নি, তবে আপনার বলার পর মঞ্চে আমি কিছু বলতে চেয়েছিলাম, বলার প্রয়োজন ও ছিলো। কিন্তু পারিনি, নিজের খুব ব্যস্ততা ছিলো বলে চলে যেতে হয়। আর মঞ্চে এত কিছু বলার জন্যে সময় ও থাকেনা। আসলে এই ভুল বা দোষ আমার নয়, এই ভুল এই দোষ আমাদের। এই ভুল এই দোষ আমাদের আঞ্চলিকতার, এটা সবাই জানে, তবে ঠিক ভাবে জানেনা। আমি কোন দিন একটা মঞ্চ পেলে বলবো সেই কথাগুলো।
-- ঠিক আছে বলিও, তবে সংশোধন করে নিও, এতে তোমারই ভালো।
-- দোয়া করবেন, ভালো থাকুন।
একমাস পর......
সেই একই হলরুমে সেই বিশেষ অতিথি সহ অনেক বিজ্ঞজনেরা বসে আছেন মঞ্চে। বলতেই হয় আজকের এই মঞ্চে নক্ষত্রের মেলা বসেছে। দর্শকের কাতারে যারা বসে আছে তাদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে নির্বাচন করা প্রথম দিকে কবিতা পড়া বা আবৃত্তি করার জন্যে। তাদের সাথে ইভার নামও থাকে। সঞ্চালক একজনকে মঞ্চে ডাকছে অন্য আরেকজনের নাম ঘোষণা দিয়ে প্রস্তুত থাকতে বলছে। এই মুহূর্তে প্রস্তুত থাকতে বলা হয় জান্নাতুল ফেরদৌস ইভাকে। ইভা সে ভাবেই প্রস্তুত। পূর্বের আবৃত্তিকারকের আবৃত্তি শেষ হলেই সঞ্চালক বলেন,
-- এবার মঞ্চে আসছেন জান্নাতুল ফেরদৌস ইভা।
ইভা মঞ্চে উঠে ডায়াসে গিয়ে দাঁড়ায়, সবার উদ্দেশে বলে,
-- আসসালামু আলাইকুম, শুভ সন্ধ্যা। আমি জান্নাতুল ফেরদৌস ইভা, মঞ্চে খুব একটা পুরানো নয়, সখে দু-চার বার উঠেছি , আপনাদের ভালোবাসা পেয়েছি। আমার লেখা একটা কবিতা পড়ে শুনাচ্ছি। আমি আগেই সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি যদি উচ্চারণে কোন ভুল হয়ে যায়।
এই বলে ইভা কবিতা পড়া শুরু করে, পুরোটাই পড়া শেষ হলেই স্টেইজে থাকা এক নক্ষত্র বলে উঠেন,
-- কই কোথাও তো ভুল উচ্চারণ হয়নি, ঠিকই পড়েছো তুমি।
ইভা মনে অনেক সাহস শক্তি পায়। মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলে,
-- আপনাদের অনুমতি পেলে আমি দু-চারটি কথা বলতে চাই।
নক্ষত্রের দুজন বললেন,
-- অবশ্যই বলবে, বলো।
-- আমি দেশের দক্ষিণ অঞ্চল নোয়াখালীর মেয়ে, ছোট বেলা থেকে কিশোরী বয়স পার করি গ্রামেই। সেখানেই আমার হাতেখড়ি, আমার পড়ালেখা। গ্রামের স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করে শহরে আসি।
আঞ্চলিকতার কারণে আমরা কিছু কিছু উচ্চারণ ভুল শিখে এসেছি। এখন কিছুটা পরিবর্তন হচ্ছে, তবে তাও আশানুরূপ নয়। এই ভুল উচ্চারণ গুলো আমার শিক্ষকদের নয়, এগুলো আমার অভিভাবক বা গুরুজনদের ও নয়। এটা আমাদের অদৃশ্য আঞ্চলিকতার। এটা কি দোষ নাকি ভুল তাও আমি বা আমরা জানিনা। কেউ নিয়ম গুলো তৈরি করেনি, তবে কেউ ভুল বলে বা দোষ বলেও ধরিয়েও দেয়নি।
উপস্থিত সবাই ইভার দিকে তাকিয়ে আছে। স্টেইজে থাকা বিশেষ অতিথি, প্রধান অতিথি সহ সকল নক্ষত্ররাজিরা ও মনোযোগ দিয়ে শুনছেন ইভার কথা। সে বলেই চলছে,
গ্রাম ছেড়ে শহরে এলাম, একই ভাবে উচ্চারণ করেই যাচ্ছি। মাঝে মাঝে অন্যদের সামনে কথা বললে ওরা হেসে উঠে, কিন্তু কেনো হাসে তা কেউ বলেনি। আমার বিয়ে হয় উত্তরাঞ্চলে। বিয়ের পরপরই সেখানে যাই। কথা বলতে গেলেই দেখি মাঝে মাঝে কথা শুনে অন্যরা হাসে, আমার কথার বা উচ্চারণের ভুল ধরে। ভুল গুলো ছিলো এমন যে পকেটকে বলতাম ফকেট। ঝাড়ুকে বলতাম জাড়ু। পিতাকে বলতাম ফিতা, আর ফিতাকে বলতাম পিতা। ভাইকে বলতাম বাই, বোনকে বলতাম ভোন। যারা শুনতো, তাদের কেউ কেউ সঠিকটা বলে দিতো। কিন্তু আমি তফাৎ খুঁজে পেতাম না। আমি ভাবতাম 'ব' আর 'ভ' একই তো, 'চ' আর 'ছ' একই তো, 'জ' আর 'ঝ' একইতো, 'প' আর 'ফ' একই তো। আস্তে আস্তে বুঝতে পারি বাংলা বর্নমালার উচ্চারণের কোথায় সমস্যা, এক পর্যায়ে বুঝি এ তো বিশাল সমস্যা। বর্ণ গুলোকে নিজেই খুঁজে বের করি। দেখলাম স্বরবর্ণ গুলো ঠিক থাকলেও ব্যঞ্জনবর্ণ গুলোর গ, ঘ, চ, ছ, ড, ঢ, জ, ঝ, প, ফ, ব, ভ, স, শ, ষ, ড়, ঢ় এর মতো জোড়া বর্ণগুলোতেই সমস্যা। ভাবলাম এটা কি আমার উচ্চারণ ভুল নাকি অন্য কিছু। অন্যরা যখন কথা বলতো আমি মন দিয়ে শুনতাম। অবসর সময়ে এই নিয়ে ভাবতাম। কিন্তু তখন আমার পাশে নোয়াখালীর আমি ছাড়া কেউ ছিলোনা বলে তফাৎ করতে পারিনি। অপেক্ষা করতাম প্রিয়জনদের কাছে আসার।
একমাস থাকার পর আমি শহরে এলাম, নিজের মা ভাই বোন ও এলাকার লোকজনের কথা শুনতে শুনতে আসল বিষয় আবিস্কার করি। দেখলাম আমরা আমরা যখন কথা বলি তখন বুঝতে কারো কোন সমস্যা হচ্ছে না, কেউ কারো দোষও ধরছে না। উচ্চারণের তফাৎ হলেও আমরা ঠিকই বুঝে যাই আমাদের শব্দগুলো বা কথা গুলো। আমাদের কাছে এটাকে হাস্যকর ও মনে হচ্ছে না। একটু একটু করে সংশোধন করা শুরু করলাম নিজেকে।
আমি শহরে থাকলেও মা আর ছোট ভাইরা থাকতো গ্রামে, গ্রাম থেকে ওরা শহরে আসে। ছোট ভাই অমিতকে স্কুলে ভর্তি করাতে নিয়ে যাই। স্যাররা অমিতকে কিছু মৌখিক প্রশ্ন করে, তার মাঝে একটা প্রশ্ন ছিলো,,,,
অভিভাবক এর ইংরেজি শব্দ কি ?
অমিত জবাব দিলো, কিন্তু F এর উচ্চারণ P বলল। স্যাররা বললেন হয়নি। আমি স্যারদের বলি,
-- ওকে লিখতে দিন, ও সঠিকটাই লিখবে।
উনারা লিখতে দিলো, অমিত ঠিকটাই লিখেছে। এরপর স্যারদের বলি,
-- এটা ওর ভুল নয়, এটা আমাদের আঞ্চলিকতার প্রভাব, এটা কারো তৈরি করা নয়, এটা একটা চলমান ভাষা বা বর্ণ ব্যবহার। স্যাররা বুঝতে পারেন বিষয়টা।
কথার মাঝে ইভা বলে,
-- মাননীয় অতিথিগণ আমি আপনাদের অনেক সময় নিয়ে নিয়েছি, আর নয়। তখনি সম্মানিত অতিথি বলেন,
-- সমস্যা নেই, তুমি বলো।
ইভা বলতে শুরু করলো,
-- আমি ভুলগুলো অনেকটাই ধরতে পেরেছি, তবে উচ্চারণে সমস্যা রয়েই যায়। আমার সন্তানরা হবার পর ওদেরকে সঠিক উচ্চারণ শিখাতে চেষ্টা করি। ওরা সঠিক উচ্চারণ শিখে। আমি যখন একটু ভুল করি ওরা আমায় ধরিয়ে দেয়। আমার লেখার সময়ে ভুল হলে ওরাই তা ধরিয়ে দেয়। অনেক সময় লেখার আগে বা বলার আগে ভেবে নিই কোনটা ঠিক লিখবো বা বলবো। আমি অনেকের মাঝে উচ্চারণের এই ভুল দেখতে পাই। তাদের অনেকেই যোগ্যতায় কর্মে বা পদবীতে অনেক উপরের অবস্থানে আছেন, কেউ চেষ্টা করেছেন, কেউ এখনো পারেননি। তাদের কারোই লিখতে তেমন সমস্যা হয়না। বলার ক্ষেত্রে সমস্যাটা দেখা যায়। তাই বলে বলছিনা সবার এই সমস্যা হয় বা হচ্ছে। কথায় আঞ্চলিক টান থাকা হলো একটা বিষয় কিন্তু বর্ণের ভুল উচ্চারণ, এটা কি আমাদের ভুল নাকি আমাদের দোষ আজো বুঝতে পারিনা। যে ভাবে আমি আমার বা আমার পরিবারের পরিবর্তন করাতে পেরেছি, সঠিকটা শিখাতে পেরেছি, আশাকরি আগামী প্রজন্ম এই উচ্চারণ গুলোর প্রতি সজাগ হবে। আর ওদেরকে যারা শিখাবেন তারাও প্রতিটি বর্ণের উচ্চারণের তফাৎ বুঝিয়ে শিখাবেন বুঝাবেন।
অমনিই পুরো হল জুড়ে হাততালি পড়ে যায়। স্টেইজ থেকেও জোরে হাত তালি আসে। ইভা বলে উঠে,
-- উপস্থিত বিজ্ঞজনেরা আপনাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি পুরো কথা গুলো শুনার জন্যে। তবে আমি এও বলছি আজ এই মঞ্চে দাঁড়িয়ে এত কথা বলতে আমার একটুও খারাপ লাগেনি, লজ্জা করেনি, যা সত্য তাই বলেছি। সত্য উচ্চারণে সাহস থাকতে হয়, লজ্জা নয়। কিন্তু সে দিন হল ভরা রুমে আমার একটা বর্ণ উচ্চারণে ভুল হওয়ায় ভরা রুমে তা ধরিয়ে দেয়া কতটা যুক্তিযুক্ত ছিলো তা আপনাদের কাছে রেখে গেলাম। সম্মানিত ব্যক্তি আমাকে ব্যক্তিগত ভাবে বলতে পারতেন, হয়তো উনি তা ভাবেননি কেনো আমার উচ্চারণে এমন ভুল ছিলো। ধন্যবাদ উপস্থিত সবাইকে, ধন্যবাদ সম্মানিত সবাইকে, ধন্যবাদ এই প্রোগ্রামের আয়োজককে। আরো ধন্যবাদ জানাই যিনি আমায় এই প্রোগ্রামে আশার জন্যে নিমন্ত্রণ করেছেন তাকে।
এই বলে ইভা মঞ্চ থেকে নেমে আসে। কিছুক্ষণ পুরো হল রুম চুপ হয়ে থাকে। ইভা নিজের আসনে এসে বসে আর দম ফেলে, মনে হয় এতক্ষণ দম ধরেই রেখেছিলো। স্বাভাবিক হয়ে এদিক ওদিক তাকায়, ওর পেছনের সিটেই বসে আছে ফয়সাল আরেফিন।
-- আরে তুমি? তুমি কখন এলে ?
আরেফিন ফিসফিস করে বলে,
-- এখানে নয়, একটু পর বাহিরে যাবো। ক্যান্টিনে বসে কফি খেতে খেতে বলবো।
মিনিট ত্রিশ থাকে ওরা রুমে, পরে বেরিয়ে আসে। পাবলিক লাইব্রেরীর ক্যান্টিন থেকে দুটো কফি নিয়ে আসে আরেফিন। বাহিরে খোলা আকাশের নিচে বসে, আরেফিন বলে,
-- ইভা তোমাকে নিয়ে আমার আর ভাবনা নেই, তুমি নিজের জায়গা খুঁজে পেয়েছো, অর্জন করেছো। মঞ্চে উঠতে সেদিন তোমার হাটু কাঁপছিলো, আর আজ তুমি দীর্ঘ সময় ধরে মঞ্চে দাঁড়িয়ে ডায়েসের সামনে এক সত্যের বর্ননা দিলে। আমি আসলে তোমায় এমনটিই দেখতে চেয়েছি।
-- তা ঠিক আছে, আগে বলো তুমি ঢাকায় এলে কবে?
-- গত কয়েকদিন থেকে তোমায় খুব দেখতে ইচ্ছে করছে, কিন্তু ছুটি পাচ্ছিলাম না। এই প্রোগ্রামে উপস্থিত থাকার নিমন্ত্রণ পাই, তুমি আসবে তাও জানতে পারি। ভাবলাম তোমায় একটা সারপ্রাইজ দিলে কেমন হয়। তাই রাতে রওয়ানা দিলাম। তোমায় চমকে দিব বলেই আগে বলিনি। তোমায় চমক দিতে এসে নিজেই চমকের সাক্ষী হয়ে গেলাম। এক সত্যের সাক্ষী হলাম। আজ রাতের বাসেই চলে যাব আবার। তুমি ভালো থেকো, দেখা হবে হয়তো কোন এক শেষ গোধূলি কিংবা শান্ত বিকেলে।
মাত্র ৩৫ মিনিটের পাশাপাশি বসা দুজনার, কিছু কথা একান্তই নিজেদের, সমান্তরাল রেললাইনের মতো ওদের সম্পর্ক, হাতে হাত নেই, স্বপ্নের বাস্তবায়ন নেই, নেই দেনাপাওনা। তবুও জনম জনমের বন্ধন হৃদয়ের বোঝাপড়া নিয়ে বিদায় দেয় একে অপরকে। দিনটার শেষ এভাবে হবে ভাবেনি ইভা, আরেফিন ও ভাবেনি ইভা নিজেকে এতটা বাস্তববাদী করে গড়ে তুলেছে।
নোয়াখালির ভাষা অন্য সব অঞ্চলের ভাষার চেয়ে আলাদা এবং তাদের বর্নমালাও ভিন্ন বলে মনে হয়। শিক্ষামূলক গল্প লিখেছেন আপু।
Replyআঞ্চলিকতা পরিহার করাই উচিত আমাদের।
Replyদারুন লিখেছেন দিদি
Reply