শরু দ্যা গ্রেট গ্রীন গ্রাসহপার-----------------তুহিন রহমান (১ম খন্ড)

শরু দ্যা গ্রেট গ্রীন গ্রাসহপার-----------------তুহিন রহমান         (১ম খন্ড)
এই বইটা প্রথম প্রকাশিত হয় ২০০০ সালের বইমেলা উপলক্ষে। নামটার কারনে হয়তঃ বইটা তেমন চলেনি তবে এর যে সাহিত্যমান সেটা আপনি নিজে পড়লে বুঝতে পারবেন। পান্ডুলিপি পড়ে প্রখ্যাত প্রবীন লেখক বুলবুল চৌধুরী বলেছিলেন,‘আমি এই বাংলায় এমন শিশুসাহিত্য কল্পনাও করতে পারিনা। এটা শিশু ও বয়স্ক উভয়কেই টার্গেট করে লেখা হয়েছে। আলমগীর যদি এটা প্রকাশ না করে তবে আমি এটা প্রকাশ করবো।’ উল্লেখ্য আরো প্রকাশনীর আলমগীর ভাই তার কথা শুনে তাড়াতাড়ি করে বইটা প্রকাশ করেছিলেন। বইটার দুটি সংস্করন হয়েছে। একটি ২০০০ সালে, আরেকটি ২০০৮ সালে। এখানে বইটার ১ম খন্ড দেয়া হলো। টাইপ করার ঝামেলাই যাইনি। সরাসরি বইটাই স্ক্যান করে দিয়ে দিয়েছি।

কভার



























পৃষ্ঠা ১



























পৃষ্ঠা ২



























পৃষ্ঠা ৩



























পৃষ্ঠা ৪



























পৃষ্ঠা ৫



























পৃষ্ঠা ৬



























পৃষ্ঠা ৭



























পৃষ্ঠা ৮



























পৃষ্ঠা ৯



























পৃষ্ঠা ১০



























পৃষ্ঠা ১১



























পৃষ্ঠা ১২



























পৃষ্ঠা ১৩



























পৃষ্ঠা ১৪



























পৃষ্ঠা ১৫



























পৃষ্ঠা ১৬



























পৃষ্ঠা ১৭



























পৃষ্ঠা ১৮



























পৃষ্ঠা ১৯



























(চলবে........)
আগামী পর্বে আরও চমৎকার ঘটনার সমাহার রয়েছে। অপেক্ষা করুন। শীঘ্রই আসছে।

চড়ুই পাখির ভালবাসা.................................শাহানা ফেরদৌসী (অনুগল্প)

চড়ুই পাখির ভালবাসা.................................শাহানা ফেরদৌসী (অনুগল্প)
ড়ুই পাখিটা একা একা বসে আছে। সঙ্গীকে খুঁজছে। সকাল থেকেই তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। খাবারের সন্ধানে কোথাও গেছে, নাকি পথ হারিয়ে সেও তার মতো একা কোথাও বসে চিৎকার করে ডাকছে তাকে, জানেনা সে। সব সময়ই তারা একসাথে ছিল। এক মূহুর্তের জন্যও তারা আলাদা হয়নি। কিন্তু আজ কি হয়ে গেল!
বাসাটা খালি পড়ে আছে। মেয়ে চড়ুইটা হারিয়ে গেছে। তাই আজ তার খাওয়াও হয়নি। সে একা বসেই আছে। আর মনে মনে ভাবছে এই বুঝি মেয়ে চড়ুইটা ফিরে এলো। কিন্তু না, সকাল গড়িয়ে দুপুর হলো, বিকেল হলো, সন্ধ্যে নেমে এলো তাও মেয়ে চড়ুইটার কোন খোঁজ পাওয়া পাওয়া যাচ্ছেনা। 
এদিকে মেয়ে চড়ুইটা আটকা পড়ে আছে এক শিকারীর জালে। ধান ক্ষেতে আটকা পড়ে আছে। অনেক চেষ্টা করেও সে তার পা ছাড়াতে পারছেনা। সে চিন্তায় শেষ। ছেলে চড়ুইটা তার জন্য কতো চিন্তা করছে। তাকে না পেয়ে সে নাওয়া খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে নিশ্চয়ই। মনে মনে সে ধরেই নিয়েছে সে আর মুক্তি পাবেনা। হঠাৎ ধান ক্ষেতের পাশ দিয়ে একজনকে আসতে দেখলো সে। ওমনি মেয়ে চড়ুইটা চিৎকার শুরু করলো। চড়ুইয়ের চিৎকার শুনে পথিক এগিয়ে গেল। তার মনে দয়া হলো। সে চড়ুইটাকে জাল থেকে ছাড়িয়ে দিল। ছাড়া পেয়ে মেয়ে চড়ুইটা মনে মনে অনেক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করল। আর পথিকও পাখিটাকে ছাড়িয়ে দিতে পেরে খুব খুশি হল। ছাড়া পেয়েই মেয়ে চড়ুইটা তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরার পথ ধরলো। 
বাড়ি ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে গেল তার।এদিকে মেয়ে চড়ুইকে ফিরে পেয়ে ছেলে চড়ুইটার সে কি আনন্দ! সে আনন্দে আত্মহারা। কোথায় হারিয়ে গিয়েছিল সে তাকে জিজ্ঞেস করলো। মেয়ে চড়ুইটা সব ঘটনা খুলে বললো। তারপর দু’জনে শপথ করল আর কারো ফসলের ক্ষেতে তারা আর যাবেনা। মেয়ে চড়ুইটা ছেলে চড়ুইকে জিজ্ঞেস করল কিছু খেয়েছে কিনা। ছেলে চড়ুইটা বলল সে কিছুই খায়নি। ‘তাহলে চলো ঘরে কিছু খাবার আছে দু’জনে মিলে ভাগাভাগি করে খাব। আজ রাতে আর কিছু খেতে হবেনা। কাল আবার খাবারের সন্ধানে বের হব।’ পরে দু’জন খেয়ে একসাথে ঘুমিয়ে পড়ল। এই হল চড়ুই পাখির ভালবাসা।

ISIL..................................David White (ঈদ সংখ্যা ২০২০)

ISIL..................................David White (ঈদ সংখ্যা ২০২০)
David White
The poet from England

ISIL
If you love like I do ! ,
well it’s a mixture of feeling , but ever so true .
And i keep my word , to my soul ,
because it’s truly what I love , and how I know .
And my heart is , ever so true .
as it belongs to me and certainly not to you !
And once , a very lost and lonely man ,
and yes you have your friends and family , but no one truly understands .
As behind closed doors , nobody lives your life .
What with all of your problems and troubles and strife .
So we search and search , but there’s no ones to be seen .
And we search and search , for our peace and harmony .
As life can be a torture , but we can make it in the end .
So just trust in yourselves , and find you’re souls to , my friends .
And some may test , your spirit and soul , but please understand as they just
don’t know .
So don’t be so quick to judge these kind of people , as they are just lost and lonely souls , but remember we’re all equal .
And so I write , and i write some more , and then Isil , comes home from work ,and walks in the front door , hello baby how was your day , and she reply’s , well I love you Dave so what more can I say , and she sits down and she tells me about her day , and all of the thoughts of me haha , they just won’t go away , and she tells me that I have her soul and all of her love just like I know .
And of course , I knew this already , because from day one I gave her my heart .
As her voice to me was left in my heart , and this was , day one and knew
this at the start , because she has a voice like an angel , and her soul is in
my heart , and her soft caring voice , brings music to my ears , and I’ll love this woman forever , I’m in so many happiness tears , drenched my face as the tears keep falling , and just as they run , when it’s my mum I’m calling ,
so these tears of joy , that I share with you , are all from my heart , because my feelings are very true .I
love you baby ❤️

স্বপ্ন ও অপেক্ষা............................আহমেদ চঞ্চল (ঈদ সংখ্যা ২০২০)

স্বপ্ন ও অপেক্ষা............................আহমেদ চঞ্চল (ঈদ সংখ্যা ২০২০)
আহমেদ চঞ্চল

স্বপ্ন
চলো দুজন হকার হবো বনগাঁ লোকালে 
সকালে বেড়িয়ে যাবো ফিরবো বিকালে,
হাসিমুখে বেড়াবো বেচে কবিতার বই
স্বপ্নের ফেরিওয়ালা সাধারন তো নই।
বিনয়, সুনীল, শক্তি আর জয় গোস্বামী
কবিগুরুও থাকবে কাছে তবে তা দামী,
মাঝে মাঝে আওড়াবো প্রিয় কোন কবিতা
নিমিষেই ফুরাবে বই যা ছিল সব ই তা।
শেষ ট্রেনে ক্লান্ত দেহে চাঁদপাড়াতে এসে
তুমি হঠাৎ নেমে যাবে জনস্রোতে ভেসে,
আমি যাবো একা একা সেই হৃদয় পুর
কিছু স্বপ্ন নিকট অতি কিছু অনেক দূর।।


অপেক্ষা
কারো কাছে দোজখ কারো কাছে বেহেশত কেউ বা বলে পৃথিবী
আমি বলি এই মহা জংশনের নাম হতে পারে অপেক্ষালয়,
এখানে আমি, তুমি আমরা কারো না কারো জন্য অপেক্ষারত।
ইছেপুর ঘাটের কাছে ঠায় দাঁড়িয়ে ভুবন মাঝি অপেক্ষা করে
কবে কুমার নদীতে আবার সেই ভরা যৌবন ফিরে আসবে
শুরু হবে পারাপার, ঘাট পাড়ানি বেড়ে গিয়ে পাঁচ টাকা হবে।
অপেক্ষা করে নবীন ডাঙ্গার কিশোরী গায়ের বধু রোজিনা
আর বছর দুয়েক গেলেই ঋণের সব টাকা শোধ হয়ে যাবে,
তখন চাইলেই দেশে ফেরত আসতে পারবে তার প্রিয় স্বামী।
রুহানীপুর হাফেজিয়া মাদ্রাসায় আঙ্গুলে হিসেব কষে এক শিশু
আসছে অগ্রহায়ণেই তার মাথায় আকাঙ্ক্ষিত পাগড়ি উঠবে,
তখন নির্দ্বিধায় সে ফিরে যেতে পারবে তার মায়ের কাছে।
আমি জানি না আমার জন্য কেউ কখনো অপেক্ষা করে কিনা
হৃদয়পুরের পরের স্টেশনে পথ চেয়ে থাকে কিনা কোন মুখ?
যদি কেউ থাকে তবে এ জগতে আমিও ভাগ্যবানদের একজন।
জগত সংসার তো মহা জংশন যার নাম হতে পারে অপেক্ষালয়
আমি তুমি সবাই অপেক্ষারত কারো না কারো অপেক্ষায়,
কারো অপেক্ষা সুখের, কারো অপেক্ষা অনাদি অনন্ত কালের।।

অশরীরি অবয়ব............................শাহরীন মৌন (ঈদ সংখ্যা ২০২০)

অশরীরি অবয়ব............................শাহরীন মৌন (ঈদ সংখ্যা ২০২০)
বাগানের ওদিকটায় কে যেন দাঁড়িয়ে আছে।  হ্যাঁ, তাই তো। লম্বা মতো কেউ। স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি আমি। কিন্তু এখানে কে আসবে?? ভাবতেই হিমশীতল  শিহরণ বয়ে গেল মেঘলার গায়ে দিয়ে। এই পুরো বাড়িতে ও একা। আর বাগানে আসতে গেলে বাড়ির ভেতর দিয়য়েই আসতে হবে। চোর হলে তো এতক্ষণে চলে যেত ওকে দেখে। কিন্তু কই, অবয়বটা তো একই জায়গায় স্থির হয়ে আছে। হঠাৎই ভয় ও তীব্র উত্তেজনা গ্রাস করল মেঘলাকে। কেননা বাড়িতে কেউ নেই। তাই কাউকে ডেকেও সাহায্য পাবে না। পেছনে সরে যাবে সেই শক্তিও নেই। অদ্ভুত একটা নেশা কাজ করতে শুরু করল মেঘলার। কে দাঁড়িয়ে আছে ওকে জানতেই হবে। ও এক পা দু পা করে এগিয়ে গেল। কাছে যেতেই মুখটা স্পষ্ট দেখতে গেল চাঁদের আলোয়। মেঘলার মনে হল কে যেন ওর গালে ঠাস করে একটা চড় মেরেছে। চারিদিকে অদ্ভুত নিস্তব্ধতা, শুনশান করছে সব। যেন পৃথিবীর সবকিছু চোখের নিমিষে স্তব্ধ হয়ে গেছে। না, এ কিভাবে সম্ভব?  না, না এটা সম্ভব না। আমি ভুল দেখছি। অবশ্যই আমি ভুল দেখছি। নিজের মনকে বৃথা সান্ত্বনা দিতে লাগল মেঘলা। কিন্তু এটা কিভাবেই বা সম্ভব?? মাথা কাজ করছে না মেঘলার। এমন পরিস্থিতিতে পরবে ভাবেনি কোনদিন। ও এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে অবয়বটার দিকে। অবয়বটাও ঠিক মুগ্ধ দৃষ্টিতে দেখছে মেঘলাকে। কিন্তু এতদিন পর এভাবে কেন আসলো ও মেঘলার কাছে??
“ সাজিদ ” অবয়বটা ঘুরে গেল পেছনের দিকে। “ সাজিদ......সাজিদ......শোন, দাঁড়াও। কিন্তু অবয়বটার যেন ওর কথা শোনার সময় নেই। চলে যাচ্ছে ও। কেন সাজিদ দেখা দিল আমাকে? কি বলতে চায় ও?“ যেও না প্লিজ। একবার শোন আমার কথাটা ”নাহ, অবয়বটা মনে হয় ওর কথা শুনতে পাচ্ছে না। চোখের পলকে অদৃশ্য হয়ে গেল অবয়বটি। হ্যাঁ, অবয়বটি আর কারো নয় সাজিদই ছিল এটা। সাজিদকে চিনতে কখনো ভুল করবে না মেঘলা।
আজ থেকে প্রায় দেড় বছর আগের কথা।  সময়টা ছিল ২০১৮ সালের জুন মাসের শেষ দিকে । ইয়ার ফাইনালের জন্য জাঁকিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছিল মেঘলা। এতটাই ব্যস্ত, এতটাই মগ্ন ছিল পড়াশোনায় নিজের বেস্ট়ফ্রেন্ডকে ও সময় দিতে পারছিল না । কিন্তু মেঘলার উপায়ও ছিল না। কারণ যেভাবেই হোক টপার ওকে হতেই হবে। তাই কেউই এখন আপন না ওর কাছে। হ্যাঁ, নিজের বেস্ট ফ্রেন্ডও না। হয়তোবা সাজিদ ওর বেস্ট ফ্রেন্ড কখনোই ছিল না । শুধু ব্যবহারই করে গেছে সাজিদকে ।  বন্ধু হিসেবে সব রকম সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করেছে সাজিদের কাছ থেকে । কিন্তু ওর জন্য কিছু করা উচিত ছিল ভাবেনি।  হয়তো ভেবেছিল, কিন্তু করা হয়ে ওঠেনি। সাজিদ ছেলে হিসেবে খুবই চাপা ছিল । হুহ ! ( ব্যাঙ্গাত্মক হাসি ) ছিলো কেন বলছি? কারণ ও আর নেই।  চলে গেছে পৃথিবীর সমস্ত মায়া ত্যাগ করে । তার জন্য কি কিছুটা হলেও মেঘলা দায়ী নয়? অবশ্যই দায়ী। ও সময় দিতে পারেনি সাজিদের কঠিন সময়ে। যখন ও বইয়ে মুখ গুঁজে পড়েছিল তখন হয়ত সাজিদ যন্ত্রণায় কষ্টে আর্তনাদ করছিল। কিন্তু কাউকে বলতে পারছিল না । কাকেই বা বলবে । তার তো বলার মত কেউ ছিল না। যে ছিল সে নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত ছিল। হ্যাঁ, নিজের স্বার্থের জন্য সাজিদকে অবহেলা করেছে মেঘলা। সাজিদের কথাগুলো শোনার মত সময় ওর কাছে ছিল না।
" মেঘলা, বাসায় আছিস ?"   সাজিদ একদিন সকালে ফোন করে মেঘলাকে  ।
" বল, কি বলবি । তাড়াতাড়ি বল। "

" এত কিসের তাড়া তোর , হুমম ?"
" সাজিদ, সামনে ইয়ার ফাইনাল । ভুলে গেছিস ?পড়ছি আমি । "
 " হ্যাঁ , পড়ছিস তো ভালো কথা । ১০ টা মিনিটও সময় হবে না তোর আমার কথা শোনার জন্য ?". শান্ত গলা সাজিদের ।
 " যদি পড়াশোনা নিয়ে কিছু বলিস, তাহলে শুনছি , বল। অন্যকিছু হলে শুনবো না । পড়া থেকে মন উঠে যাবে। " 
" আচ্ছা , থাক। ( দীর্ঘশ্বাস )  তুই পড় ভালো করে । রাখি । "
 " হ্যাঁ , রাখ। " পড়ায় আবার ডুব দিলো মেঘলা। কিন্তু .......কিন্তু ও কি জানতো এটাই সাজিদের সাথে এর শেষ কথা  । না , জানতো না । জানলে এতটা অবজ্ঞা করতো না সাজিদকে। বাস্তবে ফিরে এল মেঘলা। দেখলো যেখানে ছিল সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে। ভেতরে যাবে এমন সময় দেখল যে যেখানে সাজিদ দাঁড়িয়ে ছিল সেখানে একটা কাগজ পড়ে আছে। কাছে গিয়ে তুলতে বুঝল এটা একটা চিঠি। চিঠিটা আর কারো নয় , সাজিদের । সাজিদ দিয়ে গেছে মেঘলাকে । মেঘলা কাঁপা কাঁপা হাতে চিঠিটা খুলল।
‘‘মেঘলা,তোর কাছে যখন চিঠিটা পৌঁছাবে তখন আমি অনেক দূরে। জানি তুই তোর পড়াশোনা নিয়ে খুবই ব্যস্ত সময় পার করছিস। এতটাই ব্যস্ততা তোর যে আমার কথা শোনার মতো সময় বা ধৈর্য কোনটাই তোর নেই। কিন্তু বিশ্বাস কর, আমার তো তুই ছাড়া কেউ নাই কথাগুলো বলার জন্য। তুই ছাড়া আমি কাকে বলব বল। তুই শুনতে না চাইলেও আমি আজ বলবো। জানিস বন্ধু, ফিয়া আমার সাথে প্রতারণা করেছে। আমি তো ওকে অনেক ভালবাসতাম রে। কি ভুল ছিল আমার বল তো? কি অন্যায় করেছিলাম আমি যে ও আমাকে ছেড়ে অন্য কারো হয়ে গেল! ওর জন্য আমি কি করিনি বল? তুই তো সাক্ষী কতটা পাগলের মতো ভালোবাসি আমি ওকে। নিজের আপন সত্তাকে ভুলে ওর কথায় ওঠাবসা করেছি। শুধু ভালোবাসি বলে। কখনো অভিযোগ করিনি। ও এটা কিভাবে করতে পারলো আমার সাথে? যাক, ওকে আমি সুখী দেখতে চাই। ও যার সাথে থাকুক ভালো থাকুক। কিন্তু জানিস ও ছাড়া আমি যে অসম্পূর্ণ। ওকে ছাড়া আমার দম বন্ধ হয়ে আসে। আমি শ্বাস নিতে পারি না। একদিকে ওর দেয়া কষ্ট, অন্যদিকে বাবা-মার বঞ্চনা। তোকে কখনো বলিনি। আজ বলবো। বাবা-মা আমার সাথে ভালোভাবে কথা বলে না রে। কেন বলে না জানি না। তবে ওদের ব্যবহারে আমি স্পষ্ট বঞ্চনা, বিরক্তির ছাপ পাই। সবসময় আমাকে পড়াশোনা নিয়ে চাপ দিতে থাকে। কিন্তু আমি কি চাই তা কখনোই জানতে চায় না। তাদের ইচ্ছা আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়। অথচ আমার ইচ্ছাগুলো তাদের ইচ্ছার ভারে চাপা পড়ে যায়। আমি না এভাবে আর পারছি না। কষ্টগুলো আমার বুকের ভেতর জেঁকে বসে আছে। সরানোর জন্য কারো সাহায্য দরকার, জানিস তো। কিন্তু কেউ নেই সাহায্যের জন্য। আমি আজ বড় অসহায় রে বন্ধু। তাই এভাবে কষ্ট পাওয়ার চেয়ে সবাইকে শান্তি দেয়াই শ্রেয়। চলে যাচ্ছি আমি। তুই টেনশন করবি না। দেখিস তুই টপার হবিই। আমি জীবন যুদ্ধে হেরে গেলে কি হবে, আমি জানি আমার বন্ধু ঠিকই জয়ী হবে। সেদিনটা আমি হয়তো তোর বন্ধু হয়ে তোর পাশে থাকতে পারবো না, তোকে অভিনন্দন জানাতে পারবো না। কিন্তু দূর থেকে তোর আনন্দ দেখে ঠিক আনন্দিত হবো। আর হ্যাঁ, আমার মৃত্যুর পর এই চিঠিটা কোন না কোন ভাবে পৌঁছে যাবে। ভাল থাকিস বন্ধু।
ইতি“ তোর বন্ধু "
বুকটা কষ্টে ফেটে যাচ্ছে মেঘলার। চোখের পানি বাঁধ মানছে না  । " আমি , আমিই দায়ী সাজিদের মৃত্যুর জন্য। " হঠাৎই মেঘলার মনে হলো কেউ ওকে ডাকছে। " মেঘলা " " সাজিদ ....." ( কান্নায় ভেঙে পড়ে মেঘলা ) "  তুই কাদিস না বন্ধু  "
"  আমাকে তুই ক্ষমা করে দে , সাজিদ। আমি তোর বন্ধু হতে পারিনি।  তোকে শুধু ব্যবহারই করে গেছি।   তোর প্রয়োজনে তোর পাশে থাকিনি । তোর কোন কথা শুনিনি।  ক্ষমা করে দে আমাকে ভাই ।অনেক বড় অন্যায় করেছি তোর সাথে । ( কাঁদতে কাঁদতে বলে মেঘলা)
" আমার জন্য নিজেকে অপরাধী করিস না মেঘলা । আজ আমি আমার দোষেই সবার থেকে আলাদা। তবে আজকের পর আর আমাকে তুই দেখতে পাবি না। কিন্তু যেখানেই থাকিস জানবি এই বন্ধু তোর পাশে আছে।  এই দুটো চোখ তোকে আগলে রাখবে।  ভালো থাকিস , বন্ধু । ভালো থাকিস । "
হাওয়ায় যেন মিলে গেল সাজিদের অবয়ব । সাথে সাথে ঘুমটা ভেঙে গেল মেঘলার। কি ভয়ঙ্কর স্বপ্নই না দেখলো। মাঘ মাসের শীতেও দরদর করে ঘামছে ও। তড়িঘড়ি করে ফোনটা হাতে নিল সাজিদকে ফোন করবে বলে। ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলো সাজিদের মেসেজ । খুলতেই দেখল সাজিদ বেশকিছু ছবি পাঠিয়েছে ওর।  কক্সবাজার ঘুরতে গেছে গাধাটা।  আপন মনে হেসে উঠল মেঘলা । উফফ !! কি দুঃস্বপ্নই না দেখলো  !

ইউশা ও পেঙ্গুইন.................................মোহাম্মদ শাব্বির হোসাইন (ঈদ সংখ্যা ২০২০)

ইউশা ও পেঙ্গুইন.................................মোহাম্মদ শাব্বির হোসাইন (ঈদ সংখ্যা ২০২০)
ক রাতে ঘুমাতে যাবার আগে ইউশা তার বাবার সাথে বসে বসে টিভিতে ডিসকোভারী চ্যানেলে একটি ডকুমেন্টারি ফিল্ম দেখছিলো। এটা সম্পূর্ণটাই ছিলো বিভিন্ন প্রাণীদের নিয়ে একটা প্রামাণ্য অনুষ্ঠান। সে অবাক বিস্ময়ে দেখছিলো যে, একেকটা প্রাণী কতো জটিল এবং প্রতিকুল পরিবেশে সংগ্রাম করছে বেঁচে থাকার জন্য।যখন সে বিছানায় ঘুমাতে গেলো, শুয়ে শুয়ে চিন্তা করছিলো যা দেখলো সে সম্পর্কে। কল্পনায় সে তাকে ঐ প্রাণীদের মাঝে দেখলো। তখন হঠাৎ করেই তার মনে হলো, সে এমন এক জায়গায় রয়েছে যেখানে তার চারপাশে তুষারে ভর্তি। সে উদ্দেশ্যহীনভাবে চারদিকে ঘুরতে লাগলো।একটু পরেই সে সুন্দর, কোমল ও মিষ্টি একটা সম্ভাষণ শুনতে পেলো। ‘স্বাগতম ইউশা। আমাদের ভূবনে তোমাকে স্বাগতম।’তুমি কে? ইউশা জিজ্ঞেস করলো।সে উত্তর দিলো, আমি পেঙ্গুইন।যে প্রাণীটি উত্তর দিলো তাকে দেখতে খুব সুন্দর লাগছিলো এবং মনে হচ্ছিলো যেনো সে আইনজীবিদের গাউনের মতো কালো সুন্দর ডিজাইন করা পোশাক পরিধান করে আছে। ইউশা মনে করার চেষ্টা করলো, আসলে কী ঘটেছিলো। তার পরিষ্কার মনে পড়লো আজ রাতে শোয়ার আগে যখন সে বাবার সাথে বসে টিভিতে ডকুমেন্টারী দেখছিলো সেখানে পেঙ্গুইনদের নিয়ে একটি অংশ ছিলো। হ্যাঁ, হ্যাঁ তুমি ঠিকই বলেছো, ইউশা খুশির সাথে জবাব দিলো। আমি আজ রাতেই টিভিতে তোমাদের লাইফ নিয়ে একটা অনুষ্ঠান দেখলাম। এটা আসলেই খুব একটা ঠান্ডা জায়গা। তোমাদের কী শীত লাগে না?পেঙ্গুইনটি হেসে জবাব দিলো, এটা দক্ষিণ মেরু। এখানে তাপমাত্রা কমতে কমতে এতো নিচে নামে যে তা মাইনাস ১৩০ ডিগ্রী ফারেনহাইট (- ৮৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস) পর্যন্ত পৌঁছায়। এতো কনকনে ঠান্ডা আবহাওয়া অনেক প্রাণীকে মেরে ফেলে অর্থাৎ, অতিরিক্ত ঠান্ডার জন্য অনেক প্রাণী বেঁচে থাকতে পারে না। কিন্তু দেখো, কী অবাক করা ব্যাপার! আমাদের কোনো সমস্যাই হয় না। খুব অবাক হচ্ছো, তাই না?আসলেই তাই। আমি ভাবছি এটা কীভাবে সম্ভব?শোনো, এটা সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র আল্লাহ্ তায়ালা আমাদেরকে বিশেষ কিছু ক্ষমতা দিয়েছেন সে জন্য। আমাদের চামড়ার নিচে চর্বির মোটা ও পুরু একটা স্তর আছে। এই চর্বিই আমাদেরকে অতিরিক্ত ঠান্ডার মধ্যেও সম্পূর্ণ নিরাপদ রাখে, যেটা অন্য অনেক প্রাণীর নাই। যখন শীত আসে তখন আমরা উপকূল বরাবর আরো দক্ষিণে চলে যাই।ইউশার মনে পড়লো, তার মানে তোমরা তখন মাইগ্রেট করে অন্য জায়গায় চলে যাও? আচ্ছা, তোমাদের আর অন্য কী কী আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে যেটা আমি এখনও জানি না? এই যেমন ধরো, আজকে আমি যে ডকুমেন্টারী দেখলাম সেখানে বললো, তোমাদের ডিম থেকে বাচ্চা ফোটার আগে পর্যন্ত তোমরা ডিমের খুব বেশি । যত্ন নাও। তুমি কী এ ব্যাপারে আমাকে কিছু বলবে?পেঙ্গুইনটি হেসে বললো, অবশ্যই। অন্য কিছু প্রাণীর মতোই পুরুষ প্রজাতির পেঙ্গুইন বেশির ভাগ সময় ডিমে তা দেয়। জানো, তারা স্ত্রী পেঙ্গুইনের চেয়েও বেশি সময় ডিমে তা দেয়। তারা এ কাজটা করে দীর্ঘ ৬৫ দিন ধরে মাইনাস ২২ ডিগ্রী ফারেনহাইট (মাইনাস ৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াস) তাপমাত্রায়। শুধু তা-ই নয়, এ দীর্ঘ সময় তারা এক মুহুর্তের জন্যেও ডিম ছেড়ে যায় না। আর নতুন যে বাচ্চাটা জন্ম নেবে তার জন্য এ সময়ে মা পেঙ্গুইন যায় খাবারের খোঁজে।জন্ম নেয়ার পর প্রথম এক মাস বাচ্চা পেঙ্গুইন তারা বাবা-মায়ের পায়ের ওপর থাকে। যদি তারা তাদেরকে দুই মিনিটের জন্যেও রেখে অন্য কোথাও যায় তাহলে তারা বরফে জমে মারা যাবে।ইউশা ঘাড় নেড়ে বললো, কী সাংঘাতিক! তার মানে এ সময়টা তোমাদেরকে অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হয়। কিন্তু এতোটা কীভাবে সম্ভব? যিনি সৃষ্টি করেছেন সেই আল্লাহই সকল প্রাণীকে সে জ্ঞান দিয়ে দিয়েছেন যে, তাকে কীভাবে কী করতে হবে। আমরা শুধু সেটুকুই করি যা আল্লাহ আমাদেরকে শিখিয়ে দিয়েছেন। ইউশা বললো, তুমি ঠিক বলেছো। আমাদের মহান স্রষ্টা তাঁর প্রত্যেকটা সৃষ্টিকে ঠিক ততোটুকুই জ্ঞান দিয়ে সৃষ্টি করেছেন, যেটুকু তার জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজন। সে কোথায় থাকবে আর কীভাবে তার খাবারের খোঁজ করবে সবই তিনি শিখিয়ে দিয়েছেন। তোমাদের জীবনের দিকে তাকালেই এ বিষয়টা খুব ভালো করে বুঝা যায়।পেঙ্গুইনটা এবার ঘুরে দাঁড়ালো। তুমি অন্যান্য সৃষ্টির মধ্যেও আরো অনেক অদ্ভুত এবং মজার মজার সব উদাহরণ দেখতে পাবে। তারা প্রত্যেকেই কিন্তু আল্লাহর দেয়া এসব জ্ঞানের জন্য তাঁর কাছে শুকরিয়া জানায়।আমি আজ আর দেরি করতে পারছি না। অনেকক্ষণ হয়ে গেলো। এবার আমাকে অবশ্যই যেতে হবে। আমার পরিবারের সদস্যরা সব আমার জন্য অপেক্ষা করছে। হঠাৎ ইউশা সুন্দর একটা মিউজিক শুনতে পেলো। পরক্ষণেই বুঝতে পারলো, এখন সকাল হয়েছে এবং তার টেবিল ঘড়িতে এ্যালার্ম বাজছে। তার মনে হলো, ঘুমের মাঝেই সে খুব সুন্দর একটা ভ্রমণ করে এসেছে।

আহ কি আনন্দ.......................................(ঈদ সংখ্যা ২০২০)

আহ কি আনন্দ.......................................(ঈদ সংখ্যা ২০২০)
বৃষ্টিতে ফুটবল, আহ কি আনন্দ

ব্যাঙ লাফ, আহ কি আনন্দ

পা ভিজিয়ে হাঁটি, আহ কি আনন্দ

গেরামের টারজান, আহ কি আনন্দ

সাত চারা, আহ কি আনন্দ

শহুরে আড্ডা, আহ কি আনন্দ

নতুন বই, আহ কি আনন্দ

বৃষ্টি আইবো রে, আহ কি আনন্দ

বিদ্যাসাগরঃ হে মহাজীবন..................................ডঃ গৌরী বন্দোপাধ্যায় (ঈদ সংখ্যা ২০২০)

বিদ্যাসাগরঃ হে মহাজীবন..................................ডঃ গৌরী বন্দোপাধ্যায় (ঈদ সংখ্যা ২০২০)

ডঃ গৌরী বন্দোপাধ্যায়

দয়ার সাগর বিদ্যাসাগর
জ্বলন্ত এক নাম,
নারীমুক্তির প্রতীক তিনি
অনন্য এক সংগ্রাম ।।
স্বামীহারা নারী, লাঞ্ছিতা সমাজে
বিবাহ ছিল শুধু খেলা,
নারীর প্রাপ্তি অবজ্ঞা অনাদর
করেছিলে তুমি দূর, হে, বিদ্যাসাগর ।।
স্ত্রী শিক্ষার দ্বার খুলেছিলে তুমি
বাংলা ভাষার মধু করেছিলে দান,
সমাজের সংস্কারক, মাতৃভক্ত মহান বিদ্যাসাগর
ভোলো নি নারীর, দুঃখ অপমান ।।
শাস্ত্রমতে ‘বিদ্যা দদাতি বিনয়ম’
বিনয় ছিল তোমার ভূষণ,
তোমার আদর্শ হোক মানবের মন্ত্র
বিধবা বিবাহ আইন করেছ প্রচলন।।
প্রাতঃস্মরণীয় তুমি, হে মহাজীবন
দ্বিশতবর্ষে তোমায় জানাই প্রণাম,
তোমার তুলনা তুমিই যে শুধু
শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে আজ ধন্য হলাম ।।

এক নক্ষত্রের নিচে..............................আশিকুর রহমান বিশ্বাস (ঈদ সংখ্যা ২০২০)

এক নক্ষত্রের নিচে..............................আশিকুর রহমান বিশ্বাস (ঈদ সংখ্যা ২০২০)


আশিকুর রহমান বিশ্বাস


অতঃপর সন্ধ্যা নেমে গেল
পৃথিবীর সব ভূখণ্ডে
এইখানে -
এখুনি।
আমরা রয়ে গেছি উত্তরসূরি হয়ে
রয়ে গেছি ক'জন মিলেমিশে।
ঢের পথ আছে বাকি এখনো - এইখানে
শ্যামল - ধূসর - বালুকাময়;
আমরা রয়ে গেছি উত্তরসূরি হয়ে
রয়ে গেছি ক'জন বেদনার নীড়ে
এক নক্ষত্রের নিচে।
অথচ আমাদের কত ব্যবধান
কতটা পথ রয়েছে বাকি
চিনি নাকো কিছু, জানি নাকো আর
বিপুলা এ পৃথিবী, বিস্ময় কত, কে আছে কার!