তোমাদের মাঝে আমিও ছিলাম..........................সাকিব প্রধান অনিক





পৃথিবী একটা প্রতীযোগীতার স্থান। একটি নবজাতকের জন্মের সময়ও তাকে ৩০০ মিলিয়ন প্লিহার সাথে প্রতিযোগিতা করতে হয়। কিন্তু সেই প্রতিযোগি তার গন্তব্য পৃথিবী নামক এই গ্রহটিতে আদৌ আসতে পারবে কিনা বা এসে পড়লেও সে তার সঠিক স্থান স্বরূপ বাবা মায়ের কোল বা তাদের পরিচয় পাবে কিনা সেটা নিশ্চিত নয়। কারন আজকাল একটি জীবনের অস্তিত্বের প্রমান দিতে তাকে মরে গিয়ে বলতে হয় আমি ছিলাম এই তোমাদের মাঝেই। 
শিশুটি যখন জন্ম নেয় তার প্রতিযোগীতা হলো নিশ্বাস ফেলা, সেই নিশ্বাস সে এসির বাতাসেও নিতে পাড়ে আবার কোন এক ময়লার স্তুপে। এই কথাটাই বলে দেয় তাকে পিতা মাতা কতখানি স্বীকার করেছে! মনের সাথে মন মিল হলে প্রেম জন্ম নেয় আর দেহের সাথে দেহ মিললে সন্তান জন্ম নেয়। আসলে আজকাল গর্ভে সন্তান আসলেই মা হওয়া যায় না, কারন পতিতা আর ধর্ষিতার গর্ভেও সন্তান আসে। কিন্তু তাদের কোন স্বামী থাকে না, থাকে খদ্দের নাইলে ধর্ষনকারী। 

কোন খদ্দের বা ধর্ষনকারী কি—
আজো স্বীকার করেছে তাদের ভুল? 
তাহলে এরা  বাবা কীভাবে হবে? 
আর তারাই বা কীভাবে মা হয়? 

কিন্তু ওই পতিতা বা ধর্ষিতার মধ্যেও কোমল একটা মা লুকিয়ে আছে। সেও চায় ওই ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় আসা শিশুটিকে নিজের শিশু বলে লালন পালন করতে কিন্তু কে দেবে পিতৃ পরিচয়? 
একজন নিজের ব্যবসা ঠিক রাখতে আর আরেকজন সমাজকে মুখ দেখানোর ভয়ে ওই ভ্রুনটিকে হত্যা করে ফেলে একটা টিপসই অথবা একটা স্বাক্ষরে। প্রসেসটা খুব পরিচিত যার নাম "এবরশন"। সেই প্রসেস করিয়ে দেয় ডাক্তার। সেই নারী-পুরুষ আর ডাক্তারাও অনিচ্ছায় বা ইচ্ছায় খুনী। যে খুনের বিচার শুধুই হাশরের আদালতে সম্ভব। তবে শিশুটির কি দোষ? সে তো সন্তান, হোক পতিতার বা হোক ধর্ষিতার। সে তো তাকে মা মনে করে তার গর্ভেই থাকে।

আর সে ভাবে আমি দেখবো পৃথিবীর আলো, যে আলোতে আমার মা আছে। কিন্তু সব শিশুর মা হয় না, কারো ময়লার স্তুপ হয়, কারো এতিমখানা হয়, কারো এবরশন হয়। শিশুরা বড় অসহায়, সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস আর নির্ভরতার ক্ষমতা এদের। তারা বাবা বলতে বললে বাবা বলে মা বলতে বললে মা। আবার অনেক সময় এমনো হয় ডাক্তার নবজাতকের জন্মের সময় এমন এক কন্ডিশন দেয় যে, হয়তো মাকে বাচাতে পাড়বে নয়তো শিশুকে। তখন এমন হয় যে শিশুর পিতার স্বাক্ষরে ডাক্তাররা মাকে বাচাতে গিয়ে শিশুকে বাচাতে পাড়ে না, আবার শিশুকে বাচালে মাকে বাচাতে পাড়েনা। 

এতে কি হয়? পুরুষ সত্ত্বা নিজের অজান্তেই হয়তো খুনী হয়ে যায়। হিসাব তো সোজা, শিশু বাচলে স্বামী হয় স্ত্রীর খুনী আর নয়তো স্ত্রী বাচলে বাবা হয় সন্তানের খুনী। কারন তার স্বাক্ষরই তো ঠিক করে দিচ্ছে যে, কে বাচবে? আসলে জীবন টা জিতে যাওয়ার প্রতিযোগিতা নয়, সয়ে যাওয়ার অথবা  সইতে না পেরে হেরে যাওয়ার প্রতিযোগিতা। আজকাল বন্ধুদের আড্ডায় কে কত ছ্যকা খেয়েছে তারও হিসেব হয়। হিসেব হয় কে কতবার আত্মহত্যা করতে গিয়েও পাড়েনি! জীবন বড় অদ্ভুত! জীবন মরনের খেলা খেলার জন্যই হয়তো জীবিত।  

শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট