চড়ুই পাখিটা একা একা বসে আছে। সঙ্গীকে খুঁজছে। সকাল থেকেই তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। খাবারের সন্ধানে কোথাও গেছে, নাকি পথ হারিয়ে সেও তার মতো একা কোথাও বসে চিৎকার করে ডাকছে তাকে, জানেনা সে। সব সময়ই তারা একসাথে ছিল। এক মূহুর্তের জন্যও তারা আলাদা হয়নি। কিন্তু আজ কি হয়ে গেল!
বাসাটা খালি পড়ে আছে। মেয়ে চড়ুইটা হারিয়ে গেছে। তাই আজ তার খাওয়াও হয়নি। সে একা বসেই আছে। আর মনে মনে ভাবছে এই বুঝি মেয়ে চড়ুইটা ফিরে এলো। কিন্তু না, সকাল গড়িয়ে দুপুর হলো, বিকেল হলো, সন্ধ্যে নেমে এলো তাও মেয়ে চড়ুইটার কোন খোঁজ পাওয়া পাওয়া যাচ্ছেনা।
এদিকে মেয়ে চড়ুইটা আটকা পড়ে আছে এক শিকারীর জালে। ধান ক্ষেতে আটকা পড়ে আছে। অনেক চেষ্টা করেও সে তার পা ছাড়াতে পারছেনা। সে চিন্তায় শেষ। ছেলে চড়ুইটা তার জন্য কতো চিন্তা করছে। তাকে না পেয়ে সে নাওয়া খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে নিশ্চয়ই। মনে মনে সে ধরেই নিয়েছে সে আর মুক্তি পাবেনা। হঠাৎ ধান ক্ষেতের পাশ দিয়ে একজনকে আসতে দেখলো সে। ওমনি মেয়ে চড়ুইটা চিৎকার শুরু করলো। চড়ুইয়ের চিৎকার শুনে পথিক এগিয়ে গেল। তার মনে দয়া হলো। সে চড়ুইটাকে জাল থেকে ছাড়িয়ে দিল। ছাড়া পেয়ে মেয়ে চড়ুইটা মনে মনে অনেক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করল। আর পথিকও পাখিটাকে ছাড়িয়ে দিতে পেরে খুব খুশি হল। ছাড়া পেয়েই মেয়ে চড়ুইটা তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরার পথ ধরলো।
বাড়ি ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে গেল তার।এদিকে মেয়ে চড়ুইকে ফিরে পেয়ে ছেলে চড়ুইটার সে কি আনন্দ! সে আনন্দে আত্মহারা। কোথায় হারিয়ে গিয়েছিল সে তাকে জিজ্ঞেস করলো। মেয়ে চড়ুইটা সব ঘটনা খুলে বললো। তারপর দু’জনে শপথ করল আর কারো ফসলের ক্ষেতে তারা আর যাবেনা। মেয়ে চড়ুইটা ছেলে চড়ুইকে জিজ্ঞেস করল কিছু খেয়েছে কিনা। ছেলে চড়ুইটা বলল সে কিছুই খায়নি। ‘তাহলে চলো ঘরে কিছু খাবার আছে দু’জনে মিলে ভাগাভাগি করে খাব। আজ রাতে আর কিছু খেতে হবেনা। কাল আবার খাবারের সন্ধানে বের হব।’ পরে দু’জন খেয়ে একসাথে ঘুমিয়ে পড়ল। এই হল চড়ুই পাখির ভালবাসা।
সুন্দর গল্প
Replyসাগর