আশ্চর্য সৌন্দর্য আর বৈচিত্র্যে ভরা অথৈ-নীলের অপার সাগরবেলা প্রত্যেকবারই হৃদয়ের আঙিনায় প্রশান্তির ঢেউ তোলে।কখনো তার উত্তাল সৃষ্টির শৈল্পিক আদল আবার কখনো বা বিপুল বিশালতার মাঝে প্রাণবন্ত নির্মল রূপ। নারিকেল বীথিকায় ছাওয়া রূপালী বালুকাবেলায় কেরালার কোভালাম জলনিধি তেমনি এক শান্ত সমাহিত রুপমুগ্ধতা নিয়ে অভিসারী মনে কল্পকাহিনী রচনা করে। ভারতের দক্ষিণ ভাগের পশ্চিমঘাট পর্বতমালার মধ্যে অবস্থিত কেরালা রাজ্যের, তিরুবনন্তপুরম জেলার দক্ষিণ ভাগের একটি কোস্টাল অঞ্চল কোভালাম। মূলত হাওয়া বিচ ও সমুদ্র বিচ এই দুটির একত্রিত নাম কোভালাম বিচ।শালিমার থেকে ত্রিবান্দম সাপ্তাহিক দুদিন ট্রেন চলাচল করে এছাড়াও হাওড়া থেকে চেন্নাই পৌঁছাতে পারেন করমন্ডল এক্সপ্রেস করে। সেখান থেকে ত্রিবান্দম।রেল স্টেশন বা শহর থেকে কোভালামের দূরত্ব আনুমানিক ১৪ কিলোমিটার। যারা বিমানে আসবেন কলকাতা থেকে ত্রিবান্দম এয়ারপোর্ট -সেখান থেকে দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার।
ছায়াসুনিবিড় বেলাভূমির শান্ত প্রশস্থ রূপের মাঝে ব্ল্যাক স্যান্ড -কালো বালির সাথে নীল জলরাশির স্বর্ণালী মেলবন্ধন। বিচ টিকে বেষ্টন করে রয়েছে সাধারন থেকে উচ্চতম মানের বিভিন্ন হোটেলাদি।সমুদ্রের জলের মোহিত করা রূপ।সারাদিনই চোখে পড়ল মৎস্যজীবীদের অবাধ আনাগোনা। গভীর সমুদ্র থেকে মাছ ধরে নৌকায় প্রত্যাগমনের মনোরম দৃশ্য। বিচের মাঝ বরাবর দ্বীপে Vizhinjam jama Masjid। বিচের উত্তর প্রান্ত ধরে হাঁটলে লাইটহাউস।
নির্দিষ্ট সময়ের ভিত্তিতে সুউচ্চ বাতিঘরের ওপর থেকে নীলকান্ত কোভালামের নীলাভ অনুভূতির মনকাড়া দৃশ্য।এর থেকে আনুমানিক ২০০ মিটার দূরে সামুদ্রা মেরিন একুরিয়াম এর অবস্থান।চারিদিকে ঘুরে এসে সমুদ্র সৈকতে বসে উপলব্ধি করলাম ২০১৮ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিন কর্তৃক এটির পৃথিবীর সুন্দরতম বিচের মধ্যে একটির সম্মান পাওয়ার কারণ,এই দৃষ্টিনন্দন মোহিত রূপ আর ঢেউয়ের খেলা। শান্ত -অনুগত ঢেউ। বিচের গঠনগত বৈশিষ্ট্যের জন্য চোরাবালি বা গভীর খাদ এখানে নেই। তাই সুখের ছোঁয়া লাগে ঢেউয়ের দোলায়। খুব বড় ঢেউ না হওয়ার জন্য ভাসিয়ে বা ডুবিয়ে নিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ও থাকে না। জলকেলিতে ভরে ওঠে মন ও প্রাণ। নেত্র পল্লবে সুদূরের মায়াঞ্জন।নীল নির্জন বালুচরে সমুদ্রের অসীম জলরাশি যেন কালো বালির বুকে আল্পনা এঁকে দিয়ে যাচ্ছে।
তরঙ্গের নৃত্যচপল ভঙ্গীর বিচিত্র লীলারঙ্গ।প্রাত্যহিক ক্লান্তিময় শহুরে জীবন থেকে দূরে নিস্তব্ধতার মাঝে ঢেউয়ের তালে পৃথিবী যেন তার আপন সৌন্দর্য বিছিয়ে রেখেছে এখানে।রূপমাধুরীর সেই অমোঘ আকর্ষণে স্নিগ্ধ বাতাস অনির্বচনীয় নির্জনতা মুখর হয়ে উঠেছে। অনাদি অনন্ত সৌন্দর্যের রূপবৈভব দেখতে দেখতে সূর্যের ধীরে ধীরে সমুদ্র শায়ন।শেষ বিকেলের আলোর গোধূলিলগ্নে পশ্চিম কোলে সূর্যের ঢলে পড়ায় আবির রাঙা আকাশের রেশ। সমুদ্রের নীল রং কালো বালি সূর্যের আভায় এক মায়াময় জগতের সৃষ্টি। ক্ষণে ক্ষণে রঙ পরিবর্তন।কখনো আবির রাঙালাল,কখনো কমলা,আবার কখনো হালকা লাল। তবুও কিছু আলো যেন অবশিষ্ট রয়ে গেল ঈশান কোণে জমা হওয়া পুঞ্জীভূত মেঘের মতো। সিঁদুর রাঙা অস্তগামী সূর্যের রক্তিম হাসিতে গোধূলিবেলার ঝিরঝিরে সমীরণে প্রণয়ভিসারী হয়ে উঠল মন। হোটেলে ফিরে গিয়ে সেই রাত্রিটা এক মুঠো সুখ স্মৃতিকে অবলম্বন করে হোটেলেই কেটে গেল। নবপ্রভাতে প্রত্যাশা ও সম্ভাবনার দিগন্ত উন্মোচনের সাথে সূর্যোদয় দেখে আবার একই পথ ধরে ফিরে এলাম কলকাতায় . ..... তবুও চোখে লেগে থাকল সেই কদিনের সমুদ্রসৈকতের মাধুর্য.......
দিগন্তের বালুকাবেলায় উত্তাল হওয়া
অচেতন মনে তার রোজ আসা যাওয়া...
চিত্র :পৃথ্বীশ ভদ্র
উফ কি নিদারুন বর্ননা! কি দুর্দান্ত ছবিমালা। আরও লিখুন।
ReplyKi bolbo apnar lekhonir kotha. Marvelous legechw porte
Replyভ্রমন কাহিনী সবগুলো পড়লাম আপনার। অনুভুতির ছোঁয়া সবখানে। এটু ডিটেইল দিলে আমরাও যেতে পারতাম।
ReplyAbbosoi likhbo...asankhyo dhanyobad..
ReplyAsankhyo dhanyobad...sathe thakben..
ReplyNext time theke with communication debo....asankhyo dhanyobad
ReplyMohonio lagche sob vromon kahini apnar
ReplyAsonkhyo Dhanyobad.
Replyলেখিকাকে প্রশ্নঃ আচ্ছা নিজের হাতে মুরগি জবাই দিয়েছেন কখনও?
ReplyErom questions er karon jante parle khusi hotam. ........
Replyনা, অনেকে ভ্রমনে গিয়ে বনমোরগ ধরে খায়। অনেকে গাছ থেকে ফল পেড়ে খায় তাই জিজ্ঞাসা করলাম। আপনি জীবনে কখনও কি নিজের হাতে মোরগ মুরগি মেরেছেন কিনা সেটা জানার আগ্রহ হয়েছিল, যদি বলতেন।
ReplyOti sundor vromon golpo. Aro boro kore likhun.
ReplyAsankhyo danyobad
Reply