নুরী........................শাহানা ফেরদৌসী

ধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে নুরী। দেখতে মোটামুটি সুন্দরী। পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে নুরী তৃতীয়। জন্ম ঢাকাতেই। শৈশব ও কৈশোর ঢাকাতেই কেটেছে। যৌবনে পা রাখতেই তাদের পরিবার পাড়ি জমালো নোয়াখালীর এক মফস্বলে।
সেখানেই তার আদি পুরুষের ভিটা। সেখানেই তারা স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে দিল। চাকুরীর সুবাদে তার বাবা ঢাকাতেই থাকতেন। তাই তাদের পাঁচ ভাইবোনের দেখাশোনার দায়িত্ব তার মায়ের ওপরেই ছিল।
নুরী তার অন্য বোনদের চেয়ে আলাদা ছিল। ছেলেদের মত পোশাক পরতো, লাটিম খেলতো, ছেলেদের সাথে ঘুরে বেড়াতো। একটা সময় যখন তার অন্য দু’বোনের বিয়ে হয়ে গেল তখন নুরী খুব একা হয়ে গেল। কারন সারাদিনের দুষ্টমীর জন্য যে বোনেরা তাকে বকুনি থেকে বাঁচাতো এখন আর সেই সুবিধা না থাকাতে সে কিছুটা শান্ত হয়ে গেল। পড়ালেখা সে বরাবরই খারাপ ছিল। তাই কোন রকম নবম শ্রেনীতে যখন উঠল তখন তার মাকে জানালো সে আর পড়তে চায়না। তার মাও চিন্তায় পড়ে গেল। এখন একটাই উপায় ব্যপারটা তার বাবাকে জানানো।
যথারীতি চিঠি লিখে তার বাবাকে জানানো হলো। এইদিকে পড়ালেখা ছেড়ে দিয়ে নুরী আরো চঞ্চল হয়ে উঠলো। সারাদিন বাইরে বাইরে ঘুরে বেড়াতো। কেবল খাবার সময় ঘরে আসতো। ঘরে ফেরা মাত্রই ভাগ্যে জুটতে মায়ের বকুনী। নুরীর একটা খারাপ অভ্যাস ছিল। মাঝে মাঝে সে মানুষের এটা সেটা চুরি করতো। পাড়া প্রতিবেশীদের কাছে খুবই খারাপ ছিল সে। এইসব নিয়ে কয়েকবার বিচার শালিসও বসেছিল। প্রত্যেকবারই নুরী বলতো সে আর চুরি করবেনা। কিন্তু কয়দিন যেতে না যেতেই আবার করত। একসময় তার মা বাবা সিদ্ধান্ত নিল নুরীকে বিয়ে দেবে। শুরু হলো পাত্র খোঁজা।
প্রতিবেশী এক চাচী তার এক আত্মীয়ের জন্য নুরীকে বিয়ের প্রস্তাব দিল। পাত্রপক্ষ এলো নুরীকে দেখতে। দেখলো। এবং পছন্দও করলো। অবশেষে নুরীর বিয়ে হলো। বিয়ের প্রথম কয়েক বছর যেতে না যেতেই নুরীর সংসার ভাঙ্গলো। কারন সে তার শ্বশুরের টাকা চুরি করেছে, চুরির প্রমানও পেয়েছে তারা। কিন্তু নুরীর স্বামী নুরীকে ভীষন ভালোবাসতো তাই সে নুরীকে তালাক দিতে চায়নি। কারন ঘরে তখন তিনজন সন্তান। দুই মেয়ে আর ছেলে ফেলে নুরী কিভাবে থাকবে-এসব বলে নুরী খুব কান্নাকাটি করলো স্বামীর কাছে। শ্বশুর শ্বাশুড়ীর কাছে ক্ষমা চাইল। কিন্তু শ্বশুর শ্বাশুড়ীর মন গললো না। কারন এর আগেও নুরী বহুবার চুরি করেছে। ঘর থেকে চাল নিয়ে বিক্রি করে দিত। হাঁস মুরগী চুরি করে বিক্রি করতো। ধরা পড়লে ক্ষমা চেয়ে আর করবেনা বলত। কিন্তু এইবারের চুরিটা একটু বেশীই করে ফেলেছে। কারন চুরি করার সময় টাকা সমেত শ্বাশুড়ীর হাতে ধরা খেয়েছে। তাই এইবার আর তার কান্নাকাটি শ্বশুর শ্বাশুড়ীর মন গলাতে পারেনি। এইদিকে নুরীর স্বামীও আর কিছু বলতে পারলোনা বাবা মায়ের মুখের ওপর। বাধ্য হয়ে অবশেষে নুরীকে তালাক দিল। ছেলেমেয়েগুলোকে রেখে নুরীকে একাই বাপের বাড়ী পাঠিয়ে দিল। কিন্তু নুরী বাপের বাড়ীতে মন টেকাতে পারছেনা।
চোর হলেও সেতো একজন মা। একজন নারী। তাই সন্তানদের জন্য তার মন খুব খারাপ থাকতো। স্বামীকেও
খুব ভালোবাসতো, তাইতো মাঝে মাঝে স্বামীকে দেখার জন্য স্বামীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যেত। আর সন্তানদের খোঁজ নিত। আবার নুরীর স্বামী সন্তানদের মাঝে মাঝে দোকানে এনে নুরীকে দেখাতো। এইভাবেই কেটে গেল ছয়মাসের মতো। একসময় নুরীর মা বাবা জানলো নুরী লুকিয়ে দেখা করে তার আগের স্বামীর সাথে, ব্যপারটা তারা সহজভাবে নিলনা। নুরীকে ঘর বন্দী করলো। তারা আবার নুরীকে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। নুরীর বাবা নুরীর ভাইদের ডেকে বললো নুরীর জন্য পাত্র দেখতে। নুরীর বড় ভাই তার বাবাকে জানালেন তার এক বন্ধু আছে। বিপত্নীক। দুটো বাচ্চা রেখে বউটা মারা গেছে। লোকটা খুবই ভদ্র। দেখতেও মন্দনা। আপনি চাইলে আমি তাকে প্রস্তাবটা দিতে পারি। নুরীর বাবা বললো, যা করার তাড়াতাড়ি করবে। নুরীর বড়ো ভাই তার বিপত্নীক বন্ধুকে একদিন বাড়িতে দাওয়াত দিল। আর নুরী সম্পর্কে জানালো। এইদিকে বন্ধুটিও বিয়ের জন্য পাত্রী খুঁজছিলো। তার জন্য ভালো হলো। পাত্রী পেয়ে গেল সে। বন্ধুর বোন হওয়াতে তার জন্য আরো সুবিধা। তার বাচ্চাদেরকে সে দেখে রাখতে পারবে।
নুরীর বাবার সাথে কথা বলে সেদিনকার মতো সে বিদায় নিল। পরের শুক্রবারই তারা বিয়ের দিন ঠিক করে ফেললো। এর মধ্যে সব জেনে নুরী তার আগের স্বামীর কাছে পালিয়ে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু নুরীর ছোট ভাই ব্যপারটা ধরে ফেলে তার মাকে জানালো। নুরীর মা কড়া নজর রাখলো নুরীর ওপর। বিয়ের দু’দিন আগে বিপত্নীক লোকটা তার বাচ্চাদুটোকে পরিচয় করাতে নিয়ে এলো নুরীর সাথে। নুরী তাদের খুব আদর করলো। নুরী বরাবরই বাচ্চাদের পছন্দ করতো। বিয়ের আগেও সে বাচ্চাদের সাথে খেলাধুলা করতো, গাছে চড়তো, পানিতে লাফ দিত। তাই এই ভদ্রলোকের বাচ্চাদেরও সে আদর করলো। বাচ্চারা নুরীকে পছন্দ করল। তারা তাদের নতুন মাকে খুব পছন্দ করেছে বলে তাদের বাবাকে জানালো। বাপতো মহাখুশী হলো যে তার বাচ্চারা তাদের নতুন মাকে পছন্দ করেছে এবং তাদের মনে কোন অসন্তোষ নেই। নির্দিষ্ট দিনে নুরীর দ্বিতীয় বিয়ে হলো।
সে চলে গেল নতুন শ্বশুর বাড়ি। এইবার আর শ্বশুর শ্বাশুড়ী নেই। একা সংসার। স্বামী সকাল নয়টা অফিস যায়- ফিরে আসে বিকেল পাঁচটায়। নুরী এই সুজোগটা কাজে লাগালো।
ওদিকে নুরীর প্রথম স্বামীর কানেও গেছে তার দ্বিতীয় বিয়ের খবর। সে ব্যপারটা মানতে পারেনি। গোপনে সে খোঁজ লাগালো নুরীর নতুন সংসারের ঠিকানার জন্য। একসময় পেয়েও গেল। আবার শুরু হয়ে গেল তাদের গোপনে দেখা আর মেলামেশা। কখনও নুরী বাচ্চাদুটোকে বেড়ানোর কথা বলে নিয়ে যেত তার আগের স্বামীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে।
একদিন বাচ্চারা তাদের বাপকে বিষয়টা জানালো। ভদ্রলোক প্রথমে বিশ্বাস করতে চায়নি। কারন সে নুরীর মাঝে সেরকম কোন লক্ষনই দেখেনি। নুরীর আচার আচরনে কিছুই টের পায়নি সে। একদিন হঠাৎ দুপুরে সে অফিস থেকে বাসায় ফিরে আসে। দেখে নুরী বাসায় নেই। বাচ্চারা একা ঘুমোচ্ছে। ঘুম থেকে জাগার পর বাচ্চাদের জিজ্ঞেস করতে তারা জানায় তারা জানেনা তার নতুন মা কোথায়। তারা আরও জানায় মা প্রায় দুপুরে তাদের ঘুম পাড়িয়ে কোথায় যেন যায়। আবার বিকেলে ফিরে আসে। ব্যপারটা নুরীর দ্বিতীয় স্বামী সহজভাবে নিলোনা। সে নুরীর ভাইকে জানালো। নুরীর ভাই তার বাবাকে জানালো। বাবা সত্য ঘটনা কিনা জানার জন্য লোক লাগালো পিছনে। এক সময় সত্যিটা জানা গেল। নুরী লুকিয়ে লুকিয়ে তার আগের স্বামীর সাথে দেখা করে। সত্যি নুরী খুবই চালাক। দু’দুদিকেই সে সম্পর্ক ঠিক রেখেছে।
যখন এই সত্যিটা নুরীর দ্বিতীয় স্বামীর কানে গেল ভদ্রলোক ব্যপারটা মানতে পারলেন না। তিনি জানিয়ে দিলেন তিনি নুরীকে নিয়ে আর সংসার করতে চাননা। ভেঙ্গে গেল নুরীর দ্বিতীয় সংসারও। আবার সেই মেয়ে উঠে এলো বাপের বাড়িতে। তবে এবার সে স্বমুর্তিতে ফেরৎ এল।
তার মাকে সে সটান জানিয়ে দিল যে সে আগের স্বামীর কাছে ফিরে যেতে চায়। কিন্তু ব্যপারটা নুরীর কাছে যতটা সহজ ছিল সমাজের কাছে তা ছিল খুবই জটিল। নুরীর মা বাবা সমাজের কাছে খুবই ছোট হয়ে গেল। এই একটা মেয়ের কারনে বারবারই তাদের সমাজের কাছে মাথা নত করতে হচ্ছে। অন্য ভাইবোনগুলো এক ধরনের আর নুরী হয়েছে তাদের বীপরিত। এর মধ্যে আট ন’মাস চলে গেছে। হঠাৎ আরো ভয়ংকর এক ঝামেলা এসে উপস্থিত। নুরীর পেটে তখন সাত মাসের বাচ্চা। বিষয়টা
নুরীর মায়ের চোখ এড়ালোনা। তবে তিনি সকলের কাছ থেকে গোপন করলেন ব্যপারটা। আর নুরীর কাছে জানতে চাইলেন বাচ্চাটা কার। প্রথম স্বামীর নাকি দ্বিতীয় জনের।
নুরী সাফ জানিয়ে দিল এই বাচ্চাটা তার আগের স্বামীর। নুরীর মা ব্যপারটা জানার পর খুবই চিন্তায় পড়ে গেলেন। কিভাবে এই বারের ঘটনাটা চাপা দেবেন এটা ভেবে তার রাতের ঘুম হারাম হয়ে যায়। আগের ঘটনাগুলোর চেয়ে এটা আরও মারাত্বক। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন যে কাউকে না জানিয়েই তিনি বাচ্চাটা নষ্ট করে ফেলবেন। নুরীও রাজী হয়ে গেল মায়ের সিদ্ধান্তে। তারা গোপনে একটা ক্লিনিকে গিয়ে বাচ্চাটা নষ্ট করে ফেলল। বাচ্চাটা একটা মেয়ে বাচ্চা ছিল। নুরীর মা আর নুরী রাতের অন্ধকারে বাড়ি ফিরে এলো। নুরীর ভাই অবশ্য তাদের দেরী দেখে সন্দেহ করেছিল। কিন্তু তার মা জানিয়েছে তারা এক আত্মীয়ের বাড়ি গিয়েছিল সেখানে বাসি খাবার খেয়ে তার পেট ব্যাথা হয়েছে।
কিন্তু নুরীর মায়ের মনের ভেতর একটা অপরাধবোধ তারপর থেকে তাকে কুরে কুরে খেতে লাগলো। যত দিন যায় তিনি অসুস্থ হতে লাগলেন। নাওয়া খাওয়া ছেড়ে দিলেন। এবং এক সময় তিনি ব্রেইন স্ট্রোক করলেন। তার সমস্ত শরীর অবশ হয়ে গেল। তিনি বিছানায় পড়ে গেলেন। কিন্তু কেউ জানলো না তার এই অবস্থার পিছনে কে দায়ী। তিনি কথা বলার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেললেন। নুরী তার মাকে নিয়ে মোটেও চিন্তিত নয়। সে তার কৃতকর্মের জন্য মোটেও অনুতপ্ত নয়। এইভাবে তিন মাস কেটে যায়। একসময় নুরীর মা মারা গেলেন।
নুরীর ভাইয়েরা বিয়ের উপযুক্ত কিন্তু কেউ এখনও বিয়ে করেনি।ঘরে এখন নুরী একা থাকে সারাদিন। সময় সুজোগ বুঝে সে আবার আগের স্বামীর সাথে যোগাযোগ শুরু করলো। সে তার সন্তানদের কাছে ফিরে যেতে চায়। এদিকে নুরীর শ্বশুর একটা এ্যাক্সিডেন্টে মারা গেছেন ছয় মাস আগে। তার পথের একটা কাঁটা দুর হয়েছে।
সে তার প্রথম স্বামীকে জানালো যে সে তাকে আবার বিয়ে করতে চায়। তার স্বামীও অমত করলোনা। সে নুরীর অবৈধ সন্তানের কথা জানতো। তাই এতে তার সন্মতি ছিল। তবে তার স্বামী তাকে বিয়ের আগে একটা শর্ত দিয়ে দিল যে তাকে চুরী ছাড়তে হবে। নুরী তার শর্ত মেনে নিল।
গোপনে দু’জন কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ করে নিজেদের পরিবারের মানুষদেরকে বিষয়টা জানালো। দুই পরিবারের কেউ এই বিয়ে মেনে নেয়নি। নুরীকে তার ভাইয়েরা বাড়ি থেকে বের করে দিল। নুরীর ঠাঁই হলো তার প্রথম স্বামীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। নুরীর স্বামী একদিনের মধ্যে বাড়ি ঠিক করলো। সেই বাড়িতে নুরীকে ওঠালো, বাচ্চাদের সেই বাড়িতে নিয়ে আসলো। বাচ্চারা মাকে ফিরে পেয়ে অত্যন্ত আনন্দিত! তারা মাকে জড়িয়ে ধরে জানতে চাইলো সে আবার তাদের ফেলে চলে যাবে কিনা। নুরী তখন অনেক সুখী। সে জানালো আর কোনদিন তাদের ফেলে চলে যাবেনা। এখন থেকে সবাই একসাথে থাকবে। কেউ শত চেষ্টা করে তাদের আলাদা করতে পারবেনা। নুরী নিজের মনে শপথ করলো সে আর কখনো চুরী করবেনা। সে নিজেকে অন্য এক নারীতে রূপান্তর করবে। এর মধ্যে একদিন সে তার শ্বাশুড়ীর কাছে গেল এবং তার পা ধরে ক্ষমা চেয়ে বললো তাকে শেষ একটা সুজোগ দিতে। শ্বাশুড়ির বয়স হয়েছে। শেষ বয়সটা নাতী নাতনিদের নিয়ে সুখে কাটাতে চান বলে তিনি নুরীকে আবারও ক্ষমা করে দিলেন। নুরী এতে নিজেও খুশী, সে স্বামীকে বললো ভাড়া বাসা ত্যাগ করে নিজের বাড়িতে এসে উঠতে। স্বামী রাজী হলো। আবারও নুরীর ঠাঁই হলো শ্বশুর বাড়িতে, স্বামীর সংসারে। এই নুরীকে এখন যেন চেনাই যায়না। আগের নুরীর সাথে তার আকাশ পাতাল তফাৎ। সে নিয়মিত স্বামী, শ্বাশুড়ীর সেবা করে। সবার প্রতি সে আগের চেয়ে অনেক বেশী দায়িত্বশীল হয়ে উঠেছে।
সে নিজের বাড়িতে গিয়ে তার ভাইদের কাছে ক্ষমা চাইলো। বেশ কিছুদিন হলো তার বাবা মারা গেছেন। নুরী খবরটা শুনে অনেক কাঁদলো। তার কৃতকর্মের জন্য তারা সকলে কষ্ট পেয়েছে। সে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে একেবারেই পরিবর্তন করে ফেললো নিজেকে। আর এভাবেই শেষ হলো এক নুরীর কাহিনী।

শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট
Anonymous
August 31, 2020 at 11:55 AM

গ্রামীন পটভুমিতে লেখা গল্প। ভাল লেগেছে তবে ভেবেছিলাম শেষটা অন্যরকম হবে কিন্তু লেখিকা হতাশ করেছেন।
সিফাত

Reply
avatar
আশা
September 2, 2020 at 4:18 PM

ভাল গল্প কিন্তু হুটহাট শেষ

Reply
avatar