এতো কিছু দেখে মানুষ তখন ভাবতে শুরু করে গোলাপটিকে গাছ থেকে তার আরো আগে এই ফুলদানিতে রাখা উচিত ছিলো। আহ! কি না ভুল করে ফেলেছে সে!
পর দিন তারা দেখতে পায় ফুলটি একটু মলিন হয়ে পড়েছে হঠাৎ করে। কালকের মতো আজ আর ভ্রমররা গোলাপটির সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেনি। পরের দিন দেখলো ফুলদানির সব সুন্দর জিনিস গুলোকে গোলাপটি কেমন যেনো বিবর্ণ করে রেখেছে। পরের দিন গোলাপটির পাতা গুলো শুকিয়ে মাটিতে পরে গিয়ে ফুলদানিটা সহো আসে পাশের জায়গাটা ময়লা করে দিতেছে। তখন মানুষ ভাবে এই সুন্দর ফুলদানিটার ভিতোর এই গোলাপটা রাখলে ফুলদানিটা অসুন্দর হয়ে যাচ্ছে। তাই তাকে ফেলে দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। গোলাপটা যেনো সময় যাওয়ার সাথে সাথে তার সব সৌন্দর্য হারিয়ে আজ তার আশেপাশের সব সৌন্দর্যের জন্যে বিশাদময় হয়ে উঠেছে।
মানুষে মানুষে ভালোবাসা, বন্ধুত্ব, আত্মীয়তার সম্পর্ক গুলোও যেনো একই সূত্রে গাঁথা। সম্পর্ক গুলোতে আপনজনদের সন্নিকটে পাওয়াটা অনেক বেশি মধুর মনে হয়।একটা সময় যখন সে তাদের সান্নিধ্য লাভ করে এবং ভাবতে থাকে, কতো না ভালো হতো, যদি এই কাছের মানুষগুলোকে আগে কাছে পাওয়া যেতো। তখন নিজেকে পৃথিবীর সবথেকে খুশি মানুষ মনে হয় আপন ভালোবাসার মানুষগুলোকে কাছে পাওয়ার জন্যে। মনে হয় এই সুখ যেনো চিরস্থায়ী, পৃথিবী ধ্বংস হয়ে গেলেও এ ভ্রাতৃত্ব ভালোবাসার বন্ধন যেনো শেষ হওয়ার নয়।
কিন্তু মানুষের স্বভাব এমনই যে, তুমি যদি তোমার ভালোবাসা, ভাতৃত্বের বন্ধনের দুয়ার ভালোবাসার মানুষগুলোর জন্যে যতটুকু উন্মোচিত করবে, তারা তোমাকে দিন যাওয়ার সাথে সাথে ঠিক ততোটুকুই বা হয়তো তার চেয়ে বেশি তোমাকে হেয়ো করবে। ভালোবাসার প্রতিদানে তারা কষ্ট, হিংসা,গৃণা, অবহেলা, তাচ্ছিল্যতা ছাড়া আর কিছুই দিবে না।
সময় যাওয়ার সাথে সাথে এই পরিচিত মানুষগুলোই যেনো খুব অপরিচিত হয়ে পড়ে। কাছের সবাইকে পেয়েও যেন নিঃসঙ্গ দ্বীপের কোনো এক বাসিন্দা হয়ে পড়তে হয়। আজ তারাই যেন তোমাকে সব থেকে একা করে দিয়েছে। কাছে আসার জন্যে আজ তারা সবচেয়ে দুরে চলে গিয়েছে। শেষ পান্তে এসে মানুষ গুলোর সাথে সম্পর্কটায় তিক্ততা ছাড়া আর কিছুই বাকি থাকে না। মনে হয় তখন,
সম্পর্কটা তো দুর থেকে চিরস্থায়ী মধুর ছিলো। তখন তো সম্পর্কের ভিতর কোনো তিক্ততা ছিলো না। সবাই থেকেও আজ যেনো তুমি একা কোনো এক জনসমুদ্রের মাঝখানে।
মানুষকে বিশ্বাস আর ভালোবাসলেই মানুষ সে বিশ্বাস আর ভালোবাসার অমর্যাদা, অবহেলা করবেই। এটাই মানুষের আসল পরিচয়।